অরূপ রায়, করিমগঞ্জ (আসাম)::
বরাক তথা কুশিয়ারা আমরা এপার ওপার স্বাধীনতার পূর্বে এক ছিলাম । রাজনৈতিক কারণে আমাদের দেশকে বিভক্ত করে দেওয়া হয় । তবে দেশ ভাগ হলেও ভাগ করতে পারেনি আমাদের ভাষা, শিল্প সংস্কৃতির।বিভক্ত করতে পারেনি আকাশকে বা পাখির বিচরণ । তবে রাষ্ট্র ধর্ম পালন করে আমরা এপার ওপারের মধ্যে আমাদের আত্মার আত্মীয়তা আগের থেকে আরও দৃঢ় করে তুলতে এবং দুইদেশের মধ্যে মৈত্রীর গড়ে তোলাতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির সঙ্গে, শিল্প সংস্কৃতির মেল বন্ধন গড়ার আহাবন জানান বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মৌলভীবাজার-২ আসনে সংসদ সদস্য, ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী।
পারিবারিক সফরে এসে ৮ মার্চ শুত্রবার দেশে ফিরে যাওয়ার পথে এদেশের বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে মত বিনিময় করতে গিয়ে নিজের নানা অভিমত তুলে ধরতে গিয়ে শফিউল আলম চৌধূরী এমপি বলেন, প্রথমে দুইদেশের অর্থনৈতিক পরিকাঠামো শক্তিশালি করতে হলে প্রথমে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে হবে। যদিও সড়ক ও জলপথে যাতায়াতের ব্যবস্থা আছে তবে এই ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করতে হবে।বিশেষ করে করিমগঞ্জ ও জকিগঞ্জের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণ ও করিমগঞ্জ মহিশাসন-বাংলাদেশের শাহবাজপুরের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করে তোলার জন্য দুই দেশের সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট এই দুটি প্রকল্পের কাজ দ্রুত গতিতে সম্পুর্ন করতে আবেদন জানাবো । তিনি বলেন কুশিয়ারার এপারে ওপরে সেতুর নির্মাণ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে আলোচনা প্রায় শেষ হয়েছে । অন্যদিকে রেল যোগাযোগ ভারতের অংশ কাজ দ্রুত গতিতে করে প্রায় শেষ হওয়ার পথে। তবে ভারতীয় সংস্থার উপর বর্তায় বাংলাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে । তিনি বলেন আমি আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আবেদন রাখবো রেলের কাজ দ্রুত গতিতে শেষ করার জন্য ভারতের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ।
ভারত বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, অতি সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হয়েছে। তখন ভারত সরকার জানিয়ে দিয়েছে নাগরিকরা যে সরকারকে তাদের মতামত দেবেন ভারত সেই সরকারকে প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে সব ধরনের সহযোগিতা করে যাবে । তিনি বলেন, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না আমাদের দেশের সব থেকে বড় বন্ধু দেশ হচ্ছে ভারত । বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ সদস্য শফিউল আলম চৌধূরী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চতুর্থ বারের মত দেশের দায়িত্ব দিয়েছেন জনগণ। তাই আমরা বিশ্বাস করি এ দেশের সঙ্গে তিস্তা জল বণ্টন চুক্তি সহ আরও কিছু দাবি সুচারুভাবে সম্পন হবে ।সব শেষে তিনি বলেন, আমি পারিবারিক সফরে ভারতে এসেছি কিন্তু আমার আসার খবর পেয়ে যেভাবে আমাকে এদেশে নানা সংস্থা থেকে সম্মান জানানো হয়েছে সেই আতিথিয়তা ভোলার নয়। এখানের প্রতিজনের ভালোবাসায় আমি আপ্লুত । আপনাদের এই ভালোবাসা দেখে একটি কথা বলবো ‘আমরা সিলেটিরা সত্যিই ভাতৃত্বের বন্ধনে মানুষকে আপন করে তুলতে পারি।’
এদিন করিমগঞ্জে বাংলাদেশর সাংসদকে বরণ কালে প্রেসক্লাবের সম্পাদক অরূপ রায় বলেন, আমরা দীর্ঘ দিন থেকে দুই দেশের মধ্যে শিল্প সংস্কৃতির মেল বন্ধন গড়ার এক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছি আমাদের এই প্রয়াস আরও দৃঢ় হবে এবং আমাদের মধ্যে ভাষা সংস্কৃতির চর্চা ও দুইদেশের আসা যাওয়ার উপর জোর দিতে হবে। তবে এ প্রসঙ্গে সাংসদ বলেন ভারত বাংলাদেশের ভিসা প্রক্রিয়া আরও সহজ করে তুলতে দুই সরকারের নিকট আবেদন জানাবো একি সঙ্গে এদেশের নাগরিক ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতি আবেদন জানান বাংলাদেশে সফর করার জন্য। এদিন সাংসদকে উত্তরীয়, ফুলের তোড়া, অমৃত স্মারক সম্মান”, দুটি পুস্তক দিয়ে সম্মান জানান করিমগঞ্জ জেলার নাগরিকদের পক্ষ থেকে সৌমিত্র পাল (সভাপতি করিমগঞ্জ শহর সমিতি, বরাক উপত্যকা বঙ্গ সাহিত্যে ও সংস্কৃতি সম্মেলন), সুব্রত চৌধুরী (সদস্য ভারত বিকাশ পরিষদ করিমগঞ্জ জেলা কমিটি), রঞ্জিত দেব ভানু বিশিষ্ট (যন্ত্র শিল্পী), এস এম জাহির আব্বাস (সহ সভাপতি ), অরূপ রায় (সাধারণ সম্পাদক, প্রেস ক্লাব করিমগঞ্জ, শুভঙ্কর মালাকার (বাউল শিল্পী) জয়দীপ দেব, রূহন মালাকার, সাগ্নিক চৌধুরী (সাংবাদিক), মমজ্জাদ আহমেদ চৌধূরী, শাহাদত আহমেদ চৌধূরী, মহিদুল ইসলাম প্রমুখ ।
Leave a Reply