এইবেলা, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি ::
কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নে কাটাবাড়ি পানপুঞ্জির পানজুম দখল নিয়ে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। থানায় খাসিয়াদের দায়েরকৃত অভিযোগের পর অভিযুক্ত রফিক মিয়া পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। দখল ও পাল্টা দখল নিয়ে যে কোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় লোকজন।
কুলাউড়া থানায় খাসিয়া সম্প্রদায়ের করা লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, কর্মধা ইউনিয়নের টাট্রিউলি গ্রামের রফিক মিয়া (৪০), বশির মিয়া (৩৫), উস্তার আলী (৪৫), হারুন মিয়া (৫০) এর নেতৃত্বে ১৫-২০ জন লোক রোববার ভোর আনুমানিক ৪ টা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পানপুঞ্জিতে প্রবেশ করে। দুষ্কৃতিকারীরা অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে পানজুমের পাহারাদের তাড়িয়ে দেয়। এরপর থেকে দিনভর পান লুট ও গাছপালা কেটে তা-ব চালায় পানপুঞ্জিতে। পানজুমের পাহারাদাররা জুমের মালিককে বিষয়টি জানালে পুঞ্জিবাসী বাঁধা দিতে গেলে হামলাকারীরা প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। এতে পুঞ্জিবাসী ভয়ে ফিরে আসে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা অভিযুক্ত রফিক মিয়া কুলাউড়া থানায় পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৬৭ সনে তার পিতা মৃত আব্দুস সাত্তার সরকারে নিকট থেকে লিজ গ্রহণ করেন। খাসিয়ারা কিছু অংশ জোরপূর্বক দখল করে পান চাষ করে আসছে।
সরেজমিন ২৮ সেপ্টেম্বর সোমবার কাটাবাড়ি পানপুঞ্জির বিরোধকৃত পানজুম এলাকায় গেলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জবর দখলকারী স্থানীয় লোকজনকে পাহারা দিতে দেখা যায়। এমনকি পানজুম এলাকায় প্রবেশ করতে চাইলে দখলকারীরা বাঁধা দেয়।
রোববার ২৭ সেপ্টেম্বর বিকেলে কুলাউড়া থানার এসআই রহিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন এবং উভয়পক্ষ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখার নির্দেশ দেন।
পানজুমের মালিক জস্পার আমলরং জানান, স্থানীয় বাসিন্দারা ৪ একর ৯৫ শতক পানজুম জবরদখল করেছে। যেভাবে দুষ্কৃতিকারীরা লুটপাট চালাচ্ছে, এতে পানজুমে লাখ থেকে দেড় লাখ টাকার ক্ষতি হবে।
বিরোধকৃত এলাকার কর্মধা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিলভেস্টার পাঠাং জানান, একটা পানজুম উৎপাদনে (পান বিক্রিতে) যেতে কয়েক বছর সময় লাগে। পানজুমের মালিক জস্পার আমলরং এর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র পানজুমটি দখল গোটা পুঞ্জিবাসী হতাশ। সোমবার বিকেল পর্যন্ত পান জুম জবর দখলে রেখেছে।
কর্মধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এমএ রহমান আতিক জানান, সরকারের সংরক্ষিত বনাঞ্চল খাসিয়ারা জবরদখল করে পানজুম করে আসছে। পাহাড় স্থানীয় লোকজনেরও জীবিকা নির্বাহের অন্যতম স্থান। উভয় পক্ষ শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রেখে বিরোধ নিষ্পত্তিতে সম্মত হবে বলে আশা করি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইয়ারদৌস হাসান জানান, পানজুমে হামলার ঘটনায় দু’পক্ষের পৃথক অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত চলছে। কোনভাবেই যাে শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট না হয় সেজন্য কঠোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।#
Leave a Reply