এইবেলা, কুলাউড়া ::
আমার মেয়ে প্রাইভেট পড়িয়া বাড়িত ফিরতো পারলো না। কি দোষ আমার মেয়ের? বলেই অজ্ঞান হয়ে পড়েন নিহত স্কুল ছাত্রী আনজুমের মা নাসিমা আক্তার লাকি। আর বাবা আব্দুল খালিক মেয়ের উদ্ধার হওয়া একটা জুতা আর স্কুল ব্যাগের দিকে তাকিয়ে ছিলেন ফ্যাল ফ্যাল দৃষ্টিতে। সব কথা যেন হারিয়ে গেছে তার।
মৌলভীবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ক্রাইম অ্যান্ড অবস নোবেল চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুলাউড়া সার্কেল আজমল হোসেন, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম আপছার, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই হাবিবুর রহমান, পুলিশ, পিবিআই লোকজন রোববার ১৫ জুন ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেন।
ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো: ছয়ফুল ইসলাম ও নিহতের ফুফাতো ভাই মো: সোলেমান মিয়া জানান, শনিবার সন্ধ্যায় লাশ শনাক্তের পর পঞ্চায়েতের লোকজন নিহত আনজুমের হত্যাকারীদের শানক্ত এবং ঘটনাস্থলের সন্ধানে অভিযান চালান। একপর্যায়ে যেখানে আন্জুমর লাশ পড়ে ছিলো তা থেকে একশ গজ ভেতরে ঝোপঝাঁড়ের মধ্যে একটি জুতা ও স্কুল ব্যাগ পড়ে থাকতে দেখেন। সাথে সাথে তারা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। তবে ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করতে পারেনি।
তারা আরও জানান, আব্দুল খালিক ও নাসিমা আক্তার লাকির ২ মেয়ে ও ১ ছেলের মধ্যে নিহত আনজুম ছিলো সবার বড়। স্থানীয় শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী ছিলো। বোরকা পরে ঘটনার দিন স্কুলে প্রাইভেট পড়তে যায়। প্রাইভেট পড়া শেষে বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হন আনজুম।
এদিকে পুলিশ শনিবার রাতে ও রোববার দিনভর এলাকায় তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করে কোন ক্লু উদঘাটন করতে সক্ষম হয়নি। কেন এই হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়েছে? কারা এর সাথে জড়িত? প্রেম ঘটিত বিষয় না পারিবারিক দ্বন্দ্বে আনজুমকে হত্যা করা হয়েছে? প্রেমঘটিত কারণে নাকি পারিবারিক কলহের কারণে হত্যাকান্ডটি সংঘটিত হয়েছে পুলিশ এই দুটি বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শাহরিয়ার ইসলাম ও ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার মো: ছয়ফুল ইসলাম জানান, এধরনের ঘটনা এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। অভিভাবকরা কোন ভরসায় তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাবে। গোটা দাউদপুর এলাকা যেন ঝোপঝাড়ের গ্রাম। বিশালাকারের বাড়িঘরে মানুষ বসতি কম থাকায় জঙ্গলে পরিণত হয়েছে। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে ঘাতকরা। স্থানীয় লোকজন এসব জঙ্গল পরিষ্কারের উদ্যোগ নেয়া দরকার।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. গোলাম আপছার জানান, উদ্ধারকালে লাশটা ছিলো অর্ধগলিত। সুরতহালে শরীরে আঘাতের চিহ্ন কিংবা ধর্ষণের কোন আলামত শনাক্ত তরা যায়নি। শরীরে পানি দিলে চামড়া উঠে যাওয়ার উপক্রম হয়। ১৫ জুন রোববার সকালে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নিহত আনজুমের মা নাসিমা আক্তার লাকি বাদি হয়ে কুলাউড়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীর একটি হত্যা মামলা (নং ১৩ তারিখ ১৫/০৬/২৫) দায়ের করেন।
উল্লেখ্য, মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় নিখোঁজের ২দিন পর নাসিফা জান্নাত আনজুম (১৫) নামক এক স্কুল ছাত্রীর লাশ ১৪ জুন শনিবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত আনজুম উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের দাউদপুর গ্রামের আব্দুল খালিকের মেয়ে এবং স্থানীয় শ্রীপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। সে বৃহস্পতিবার (১২ জুন) সকালে প্রাইভেট পড়তে স্কুলে যায় । প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে নিখোঁজ হয়। শনিবার বিকাল ৫ টার দিকে বাড়ির পাশে পারাইছড়া নামক পাহাড়ী ঝরণায় লাশ পড়ে থাকতে দেখেন।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply