আবদুল আহাদ ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩১ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন ও প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচি বাস্তবায়ন বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রটোকল অফিসার-২ মোঃ আবু জাফর রাজু। বুধবার (১৭ জুন) দুপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ হলরুমে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজু বলেন, করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা ও প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা কর্মসূচী বাস্তবায়নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা থেকে প্রকৃত প্রাপ্যদের মধ্য থেকে কেউ যাতে বাদ না পড়েন সে দিকে সবাইকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ার সাথে সাথে তা মোকাবেলায় ও জনগনকে নিরাপদ রাখতে ব্যক্তিসহ প্রতিষ্টান পর্যায়ে দ্রুত বিভিন্ন ধরনের কার্যত প্রদক্ষেপ গ্রহন করে বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মতবিনিময়ে উপস্থিত সকলের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া কামনা করেন।
এদিকে মতবিনিময় সভায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন বক্তারা প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল অফিসার-২ আবু জাফর রাজুর কাছে দাবি তুলে ধরে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে জনসংখ্যার তুলনায় কুলাউড়ায় যে সরকারি বরাদ্দ এসেছে তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই অপ্রতুল। এমন দূর্যোগের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কুলাউড়ার মানুষের জন্য বাড়তি কিছু থোক বরাদ্ধের ব্যবস্থা করার অনুরোধ জানান। কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরী ভিত্তিতে একটি আইসিইউ এ্যাম্বুলেন্স চালু করার জোর দাবি জানান।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক তাঁর বক্তব্য বলেন, কুলাউড়ায় করোনা সংক্রামিত হওয়ার পর ৭ জুন পর্যন্ত ৬২৪ টি করোনা পরীক্ষার স্যাম্পুল পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে ৫৩ টি রিপোর্ট পজেটিভ আসে। সুস্থ হয়েছেন ৯ জন। বাকি পরীক্ষার রিপোর্ট অপেক্ষামান আছে। করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসতে সপ্তাহ থেকে দশদিন পর্যন্ত সময় লাগছে। জেলা শহরে পিসিআর ল্যাব চালু থাকলে খুবই কম সময়ের মধ্য করোনা পরীক্ষার ফলাফল পাওয়া সম্ভব হতো। জনসংখ্যার তুলনায় জেলার মধ্যে কুলাউড়া বৃহৎ উপজেলা হওয়ার কারণে দিন দিন করোনা রোগীর সংখ্যা ক্রমশই বাড়ছে। এমতাবস্থায় জরুরী ভাবে দ্রুত ও সঠিক চিকিৎসার জন্য মৌলভীবাজার জেলায় একটি পিসিআর ল্যাব স্থাপন করার জোর দাবি জানান। এসময় তাঁর কথার সাথে উপস্থিত সবাই একাত্মতা পোষণ করেন।
এছাড়া মতবিনিময়ে বক্তব্য রাখেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসম কামরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেহা ফেরদৌস চৌধুরী পপি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃ পঃ কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল হক, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জগলুল হায়দার, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনর্চাজ মো. ইয়ারদৌস হাসান, বরমচাল ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল আহবাব শাহজাহান, পৃথিমপাশা ইউপির চেয়ারম্যান নবাব আলী বাকর খান, ব্রাহ্মণবাজার ইউপির চেয়ারম্যান প্রভাষক মমদুদ হোসেন, কর্মধা ইউপির চেয়ারম্যান এম এ রহমান আতিক, ভুকশিমইল ইউপির চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, রাউৎগাও ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল, হাজীপুর ইউপির চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত বাচ্চু, কুলাউড়া পৌর আওয়ামীলীগের সম্পাদক গৌরা দে, সাংবাদিক এম শাকিল রশীদ চৌধুরী, স্বপন কুমার দেব রতন, মাহফুজ শাকিল প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও এটিএম ফরহাদ চৌধুরী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সরকারিভাবে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ৩৪৪ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ এসেছে। এরমধ্যে ৩০৩ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। ৪১ মেট্রিক টন চাল এখনো মজুদ আছে। নগদ অর্থ সহায়তা এসেছে ১৮ লক্ষ ১১ হাজার ৫০০ টাকা। শিশু খাদ্যর জন্য নগদ অর্থ এসেছে ৫ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা। কুলাউড়ায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মোট ৪১ হাজার উপকারভোগীর তালিকা করা হয়েছে, তন্মধ্যে ৩৪ হাজার পরিবারকে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত মানবিক সহায়তা তালিকার জন্য ১১ হাজার ৫ শত ২১ জন উপকারভোগীর নামের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এসময় তিনি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
Leave a Reply