এইবেলা, কুলাউড়া ::
হাকালুকির গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহালে পরিকল্পিত হয়রানিমুলক মামলার কারণে মাছ আহরণ ও বিক্রি করতে পারছে না ইজারাদার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। জলমহালের খাজনাসহ ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও দিশেহারা সমিতির সদস্যরা। সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমিতির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে হয়রানির অভিযোগ ইজারাদারের।
জানা গেছে, হাকালুকি হাওরের প্রায় ২ হাজার একরের বৃহৎ জলমহালটি ১৪২৫-১৪৩০ বাংলা সনের জন্য একক আবেদনকারী হিসেবে ভুমি মন্ত্রণালয় হতে উন্নয়ন প্রকল্পে ইজারা নেয় বড়লেখার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। সরকারের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ১৪২৫-২৬ ও ২৭ সনের ইজারা মূল্য, ভ্যাট ও জামানতসহ প্রায় সোয়া ৪ কোটি রাজস্ব পরিশোধ করে উক্ত সমিতি। এছাড়াও তারা উক্ত জলমহালের উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষন খাতে আরো প্রায় ২ কোটি টাকা ব্যয় করেছে। শর্তানুযায়ী মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতি চলিত সনে মাছ ধরার (ফিসিং) কথা। চুক্তিমোতাবেক মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি যখন বিল ফিসিংয়ের প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখনই সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমিতি নানা ষড়যন্ত্র শুরু করে।
ইজারাদার মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি সালাম আহমদ, সাধারণ সম্পাদক শিপার আহমদ, কোষাধ্যক্ষ হেলাল মিয়া জানান, আমাদের সমিতি গোটাউরা হাওরখাল (বদ্দ) জলমহালটি ৬ বছরের জন্য লীজ নিয়েছে। সমিতির সদস্যরা ধারদেনা করে খাজনা পরিশোধ করেছেন। সরকারী রাজস্বসহ প্রায় সোয়া ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ফিসিংয়ের অফিসিয়েল কার্যক্রম চলাকালে সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি আমাদের সমিতির বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমুলক মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। তারা মামলা-মোকদ্দমার বেড়াজালে এ জলমহালের মাছ লুটের অপচেষ্টায় লিপ্ত। স্বার্থান্বেষী মহলের ইশারায় ভুয়া অভিযোগ তুলে মানববন্ধন করেছে। হাওরখাল বিলের বাঁধ কেটে পানি কমিয়ে অবৈধভাবে মাছ আহরণের অভিযোগ তুলেসোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি। মিথ্যা তথ্য দিয়ে আদালতকে বিভ্রান্ত করে মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতিকে ক্ষতিগ্রস্থ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। ইজারা চুক্তি অনুযায়ী বৈধপন্থায় মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমিতি চলতি মৌসুমে মাছ আহরণ করবে। ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেও মাছ ধরতে না পারলে সমিতির সদস্যদের বাড়িঘর বিক্রি করেও ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হবে না।
সরেজমিনে গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহাল ঘুরে কোথাও বাধ কেটে পানি কমানোর কিংবা অবৈধভাবে মাছ ধরার আলামত পাওয়া যায়নি। জলমহাল জুড়ে মাছের অবাধ বিচরনের সরঞ্জামাদি ও বিলের চতুর্দিকে উন্নয়ন স্কিমে নির্মিত বাঁধ অক্ষত দেখা গেছে। বিলে এখনও থৈ থৈ পানি মাছ লুটের ও বাঁধ কাটার অভিযোগের সত্যতা মেলেনি।
সোনারবাংলা মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মৎস্যজীবি সমবায় সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা এখলাছুর রহমান, আদালতের স্থিতাবস্থা রেখে মাছ শিকার করায় মানববন্ধন করেছি। নীতিমালা না মেনে মাছ আহরণ করলে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে।
ভুমি মন্ত্রণালয়ের সায়রাত-১ অধিশাখার উপ-সচিব তাজুল ইসলাম মিয়া জানান, গোটাউরা হাওরখাল গ্রুপ (বদ্দ) জলমহালের ওপর সরকার পক্ষের আপীল মামলায় আদালত দখল হিসেবে স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন। যেহেতু মাধবকুন্ড মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি খাজনা পরিশোধ করে জলমহালের দখলে রয়েছে, সেহেতু তাদেরকে মাছ ধরা থেকে বারিত রাখার আইনগত সুযোগ নেই। #
Leave a Reply