বিশেষ প্রতিনিধি ::
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নে পরিবেশ আইন লঙ্ঘন করে টিলা কেটে রাস্তা প্রশস্তকরণের দায়ে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেম্বারসহ তিন জনকে ১৩ লাখ ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ে শুনানি শেষে এ জরিমানা করা হয়।
স্থানীয় ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় জয়চণ্ডীর রঙ্গীরকুল থেকে পাঁচপীর জালাই এলাকা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা সংস্কারের উপজেলা প্রকল্প অফিসের মাধ্যমে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এ কাজের প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ। ওই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে দুই পাশে ছোট-বড় টিলা রয়েছে। এসব স্থানে খননযন্ত্র দিয়ে টিলা কেটে রাস্তা প্রশস্ত করা হয়।
এদিকে টিলা কাটার খবর পেয়ে ৪ জানুয়ারি সোমবার পরিবেশ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। সরেজমিনে এসে টিলা কাটার সত্যতা পেয়ে অধিদপ্তরের সিলেটের বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকের কাছে প্রতিবেদন প্রেরণ করেন তিনি । পরে পরিচালক ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ, স্থানীয় ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনু মিয়া ও খননযন্ত্রের মালিক স্থানীয় দিলদারপুর গ্রামের বাসিন্দা এলাইছ মিয়ার নামে নোটিশ পাঠান।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দপুরে অভিযুক্ত তিনজনের মধ্যে দুই জন (চেয়ারম্যান বাদে) পরিবেশ অধিদপ্তরের সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়ে উপস্থিত হন। এসময় কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ এমরান হোসেন এর উপস্থিতিতে তাদের শুনানি হয়। দীর্ঘ শুনানি শেষে নিজেদের অপরাধ স্বীকার করে নেয়ায় তাদের উপর এই জরিমানা আরোপ করা হয় এবং আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মৌলভীবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক বদরুল হুদা জানান, সরেজমিন পরিদর্শনে অনুমোদন ছাড়া টিলা কাটার প্রমাণ পাওয়া গেছে। রাস্তার দুই পাশে ছোট-বড় টিলার গড়ে আট ফুট উচ্চতায় কাটা পড়েছে। রাস্তাটি আগে ছোট ছিল। টিলা কেটে এটি প্রশস্ত করা হয়েছে। টিলা কাটায় ১৯৯৫ সালের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। তাই তিনজনকে জরিমানা করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে ইউপি সদস্য মনু মিয়া ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। এদিকে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ইউপি চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ ফোন ধরেননি।
এ ব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শিমুল আলী বলেন, রাস্তা প্রশস্ত করতে গিয়ে প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা দুই পাশের টিলা কিছু কেটে ফেলেছেন। যারফলে পরিবেশ অধিদপ্তর ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়েছে।
Leave a Reply