এইবেলা ডেস্ক ::
“শিশু মৃত্যুর জন্য দায়ী বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধকে এসডিজির অন্তর্ভুক্ত করা হলেও পানিতে ডুবে মৃত্যুকে অগ্রাধিকার তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
ফলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার প্রতিরোধে কর্মসূচি গ্রহণ না করা হলে সার্বিকভাবে শিশুমৃত্যুর উচ্চহার থেকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু প্রতিরোধে বাংলাদেশের একটি জাতীয় নীতিমালা প্রয়োজন, যেন সারা দেশে একটি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেয়া যায়। এজন্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি গণমাধ্যমকেও সক্রিয় ভুমিকা পালন করতে হবে।”
গণমাধ্যম ও উন্নয়ন যোগাযোগ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান সমষ্টি আয়োজিত এক পরামর্শ সভায় এসব কথা বলা হয়। সভায় বিভিন্ন গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক দাতা সংস্থা গ্লোবাল হেল্থ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের সহযোগিতায় এটি আয়োজন করা হয়।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে সমষ্টি পরিচালিত এক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ১৩ মাসে সারাদেশে ৪৬৭টি ঘটনায় ৮৩৩ জন পানিতে ডুবে মারা গেছে। এদের মধ্যে ৬৮৬ জনই (৮২.৩৫%) শিশু। মৃতদের মধ্যে ২৮১ জন কন্যাশিশু রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুরা পরিবারের অন্য সদস্যদের অগোচরে বাড়ির আশেপাশের পুকুর বা জলাশয়ে চলে যায় এবং দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সভায় বলা হয়, পানিতে ডুবে মৃত্যুর তথ্য এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থাগুলো এখনো অনেকটাই অজানা। এ বিষয়ে ব্যাপক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে। তবে কালক্ষেপণ না করে এখন পর্যন্ত যে সমস্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে তা জরুরি ভিত্তিতে কাজে লাগিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধের কর্মকৌশল তৈরি করতে হবে। এছাড়া পানিতে ডুবে মৃত্যুর সবগুলো ঘটনার তথ্য গণমাধ্যম পায় না।
এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয়ভাবে কোনো কার্যকর তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা এখনো গড়ে উঠেনি। আবার গণমাধ্যম প্রতিবেদনগুলো শুধুমাত্র ঘটনাকেন্দ্রিক। এ নিয়ে গভীরতাধর্মী প্রতিবেদনের অভাব রয়েছে। গভীরতাধর্মী প্রতিবেদনে গণমাধ্যমগুলো গুরুত্ব দিলে বিষয়টি নীতি-নির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্ব পাবে এবং এ নিয়ে জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়টিকে তরান্বিত করবে।
সভায় বেসরকারি সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) পরিচালক ড. আমিনুর রহমান সাম্প্রতিক এক গবেষণা প্রতিবেদনের বরাতে বলেন, দিনের প্রথমভাগে শিশুদের নিবিড় তত্ত্বাবধানে রাখা হলে বাংলাদেশে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার ৭০ শতাংশ রোধ করা সম্ভব। এক্ষেত্রে গ্রামভিত্তিক শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র সফলভাবে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যু রোধে কার্যকর। প্রয়োজন কার্যকর উদ্যোগ, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয় ও প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান করা।
সভার বিভিন্ন অধিবেশন পরিচালনা করেন সমষ্টি’র পরিচালক ও চ্যানেল আইয়ের জেষ্ঠ্য বার্তা সম্পাদক মীর মাসরুর জামান, সমষ্টির কর্মসূচী পরিচালক মীর সাহিদুল আলম, গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকিসি ইনকিউবেটরের কান্ট্রি লিড রুহুল কুদ্দুস প্রমুখ।#
Leave a Reply