এইবেলা, কুলাউড়া ::
নিখোঁজের ৩ দিন পর কুলাউড়া উপজেলা শহরের মিলিপ্লাজার ব্যবসায়ী আব্দুল মনাফ (৩২) এর অর্ধগলিত লাশ ১৫ ডিসেম্বর মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১১টায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। হত্যাকারিরা বাড়ির পাশের একটি গভীর গর্তে সমতল থেকে প্রায় ৬ফুট মাটির নিচে পুতে রাখে। নিহত মনাফ উপজেলার ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের মৃত ইয়াকুব আলীর ছেলে।
জানা যায়, গত ১২ ডিসেম্বর শনিবার রাত ৯টায় আব্দুল মনাফ নামের ওই ব্যবসায়ী শহরের মিলিপ্লাজার মনাফ টেলিকম সেন্টার নামক দোকানটি বন্ধ করে গ্রামের বাড়ি মীরশংরের উদ্দেশ্যে সিএনজি অটোরিক্সা যোগে চলে যান। কিন্তু সিএনজি অটোরিক্সা থেকে নেমে নিজ বাড়ির সামনে যাওয়ার পর থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ঘটনার পরদিন ১৩ ডিসেম্বর তার বড় ভাই আজির উদ্দিন বাদি হয়ে কুলাউড়া থানা সাধারণ ডায়েরি (নং-৪১২) করেন।

সাধারণ ডায়েরির পর পুলিশ সোর্সের দেয়া তথ্য মতে হত্যাকারী শাহিনুর রহমান শাহিদকে আটক করে পুলিশ। আসামী শাহিনুর রহমান শাহিদের দেয়া তথ্য মতে, মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১ টায় তার বসত ঘরের পেছনের একটি গভীর গর্ত থেকে আব্দুল মনাফের মৃত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, আসামী শাহিদের ঘরের পেছনের বাথরুমের সেফটিক টাংকের ভেতর থেকে মনাফের ব্যবহৃত ম্যানিব্যাগ, জাতীয় পরিচয়পত্র এবং একটি মোবাইল সীমের ফ্রেম ও একটি সীমের ছিড়া প্যাকেট পায় পুলিশ।
তখন সন্দেহজনকভাবে শাহিদকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ঘটনা স্বীকার করে। ঘাতক শাহিদ জানায়, আব্দুল মনাফ কুলাউড়া হতে সিএনজি চালিত অটোরিক্সতে স্থানীয় ঘাটের বাজার সংলগ্ন কালাচান্দের পুলে নামিয়া বামপাশের ইট সোলিং রাস্তা দিয়া বাড়ীতে আসার পথে রাত ১০ টায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী হামলা চালানো হয়।
আসামী শহিদ ও তার অপর সহযোগি মিলে লোহার পাইপ ও লাঠি দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে আব্দুল মনাফকে এলোপাতাড়ি মারপিট শুরু করেন। মনাফের মাথায় স্বজোরে আঘাতের ফলে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
হত্যার বিষয়টি গোপন করার উদ্দেশ্যে মৃতদেহটি হত্যাকারিরা ধরাধরি করে শাহিদের বসত ঘরের পেছনে একটি গর্তের ভেতর রেখে উপরে প্রায় ৬ফুট মাটি চাপা দেয়। এরপর সেখানে খড়কুটো দিয়ে ঢেকে রাখে।
রাতে নিহত আব্দুল মনাফের লাশ উদ্ধারকালে এলাকার হাজার উৎসুক লোক ভীড় জমান। লাশ উদ্ধারকালে কুলাউড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সফি আহমদ সলমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কুলাউড়া সার্কেল) সাদেক কাওসার দস্তগীর, কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ কর্মকর্তা বিনয় ভূষণ রায়, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমিনুল ইসলামসহ থানা পুলিশের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার দায়ে ভূকশিমইল ইউনিয়নের মীরশংকর গ্রামের মৃত মাহমুদ আলীর ছেলে শাহিনুর রহমান শাহিদ (৪০), আতিকুর রহমান চান মিয়া (৫০), মোঃ ফজলু মিয়া (৪৫), মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে সামছুদ্দিন (৪২), ফজলু মিয়ার ছেলে ফয়েজ আহমদ (২২), মুত চুনু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৩), কে গ্রেফতার করে।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, আসামীর শাহিনুর রহমান শাহিদের সাথে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে নিহত মনাফের পরিবারের। কিন্তু মনাফ অত্যন্ত নিরীহ ও শান্ত প্রকৃতির।
এ ঘটনায় আব্দুল মনাফের বড় ভাই আজির উদ্দিন বাদী হয়ে কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১০ তাং ১৬/১২/২০) দায়ের করেছেন।
কুলাউড়া থানার ওসি বিনয় ভূষণ রায় জানান, আব্দুল মনাফের মৃত দেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের সহিত জড়িত আসামীদের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আসামীদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply