কুলাউড়ায় আলোচিত মনাফ হত্যাকান্ড- মাত্র ৩০ মিনিটেই সম্পন্ন হয় পুরো ঘটনা – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান ফুলবাড়ীতে বিজিবি’র অভিযানে মাদকদ্রব্য ও ভারতীয় শাড়ি উদ্ধার সহকারি শিক্ষকদের সাটডাউন- বড়লেখায় কক্ষের তালা ভেঙ্গে পরীক্ষা নেওয়ালেন অভিভাবকরা কুলাউড়ার মুরইছড়া  সীমান্তে  ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বিএসএফের গুলিতে  যুবক নিহত কুলাউড়ায় নাগরিক সমন্বয় প্রকল্পের বার্ষিক টাউন হল মিটিং কর্মক্ষেত্রের চাহিদা অনুযায়ী নিজেকে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও মহিউদ্দিন বড়লেখায় প্রধান শিক্ষককে ছুরিকাঘাতে হত্যার চেষ্টা প্রাক্তন ছাত্র গ্রেফতার

কুলাউড়ায় আলোচিত মনাফ হত্যাকান্ড- মাত্র ৩০ মিনিটেই সম্পন্ন হয় পুরো ঘটনা

  • বৃহস্পতিবার, ৩১ ডিসেম্বর, ২০২০

Manual6 Ad Code

আজিজুল ইসলাম ::

কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের বাসিন্দা ও শহরের মিলি প্লাজার ব্যবসায়ী মানফ হত্যাকান্ড ছিলো ২০২০ বর্বরোচিত ও হৃদয় বিদারক ঘটানা। মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যবধানে মনাফের মৃত্যু নিশ্চিত করে গভীর গর্তে পুতে রাখা হয় মনাফের লাশ। হত্যাকান্ডটি ছিলো অত্যন্ত সুপরিকল্পিত। ঘটনার সাথে জড়িত ৬ জনকে পুলিশ আটক করতে সক্ষম হলেও অপর এক আসামী রয়েছে পলাতক।

সরেজমিন ব্যবসায়ী নিহত ব্যবসায়ী মনাফের গ্রামের বাড়ি ভুকশিমইল ইউনিয়নের মীরশঙ্কর গ্রামে গেলে মনে হয় মনাফের শোকে পুরো গ্রামবাসীই যেন শোকাতুর। যাকে বলা হয় নিহত মনাফের কথা, সবাই এক বাক্যে বলে বড় ভালো ছিলো ছেলেটা। নিহত মনাফের বাড়ির এক পাশে এখনও আছে তার পালিত শখের কবুতর। কিন্তু মনাফ আর কবুতরের জন্য খাবার নিয়ে আসেন না।

Manual1 Ad Code

এই কবুতরের খাবারই মনাফ হত্যার ক্লু উদঘাটনে করেছে সহায়তা। বাড়িতে প্রবেশের একশ গজ আগে রাস্তায় পড়েছিলো মনাফের শখের কবুতরের খাবার (ফিড)। সেই সাথে কিছু রক্ত ছিলো। তাতেই পরিবার ও পুলিশের ধারণা, দুর্বৃত্তরা মনাফকে হত্যা করেছে।

১২ ডিসেম্বর রাতে নিখোঁজ হওয়া মনাফের লাশ ঘটনার ৩দিন পর ১৫ ডিসেম্বর তার আপন চাচার বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্কের পাশের গভীর গর্ত থেকে উত্তোলন করা হয়। নৃশংস ও পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডটি ঘটায় নিহত মনাফের আপন চাচাতো ও খালাতো ভাইদের পরিকল্পনায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, হত্যাকারীরা মনাফকে হত্যার দু’টি কারণ। অন্যতম কারণ হলো মনাফ পরিবারের আয়ের সবচেয়ে বড় উৎস। তাকে হত্যা করলে পরিবার আর্থিকভাবে পঙ্গু হবে। শহরের মিলি প্লাজায় মনাফ টেলিকম নামে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে মনাফের। অন্য কারণ হত্যাকান্ডের পর জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধও থেমে যাবে। ফলে কয়েক মাস থেকে তারা পরিকল্পনা শুরু করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নে খনন করা হয় গভীর গর্ত। সেইসাথে বাড়ির প্রবেশ পথে লাগানো বৈদ্যুতিক বাতিও বন্ধ করে দেয়া হয়।

Manual3 Ad Code

পুলিশ ও আদালতে ১৬৪ ধারায় আটক আসামীরা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিলেও আসামীদের ২৩ ডিসেম্বর একদিনের রিমান্ডে আনে কুলাউড়া থানায় পুলিশ। রিমান্ডে যে কাঠের লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় মনাফকে, সেই লাঠিও উদ্ধার করা হয়।

Manual3 Ad Code

পুলিশের কাছে দেয়া স্বীকারোক্তিকে আসামী জানায়, নিহত মনাফের খালাতো ভাই সামছুদ্দিন, চাচাতো ভাই শাহিদ ও ভাতিজা জাহাঙ্গির মিলেই প্রথম আক্রমন চালায় মনাফের উপর। প্রথমে তাকে আক্রমন করে মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে ফেলে। কাঠের লাঠি দিয়ে নাকের উপর অংশে এক বাড়িতেই মনাফের মৃত্যু প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। রক্ত যাতে না পড়ে তার জন্য পুকুরের পানিতে ফেলা হয়। পানিতে বাকি মৃত্যু নিশ্চিত করে নেয়া হয় পূর্বপরিকল্পনা করে রাখা গর্তে। সেখানে মনাফের লাশ পুতে তার উপরে পাশের মজা পুকুর থেকে কাঁদা মাঠি দিয়ে চাপা দেয়া হয়। এর উপর ধানের খড়কুটো দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। মাত্র ৩০ মিনিটে পুরো ঘটনা সম্পন্ন করা হয়। মনাফের সাথে থাকা মানি ব্যাগ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল সীম কার্ডের কাগজ ফেলে দেয়া হয় সেফটি ট্যাঙ্কিতে।

১৫ ডিসেম্বর পুলিশি তদন্তকালে সেফটি ট্যাঙ্কিতে পাওয়ায় মনাফের মানি ব্যাগ, জাতীয় পরিচয়পত্র ও মোবাইল সীম কার্ডের কাগজ রহস্য আরও ঘনিভূত হয় পুলিশের কাছে। চালানো হয় চিরুনি অভিযান। মিলে আরও কিছু আলামত। সেই আলামত অনুসারে পুলিশ শাহিনুর রহমান শাহিদ (৪০), আতিকুর রহমান চান মিয়া (৫০), মোঃ ফজলু মিয়া (৪৫), তার ছেলে ফয়েজ আহমদ (২২), মৃত চুনু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৩), আটক করে। শাহিদের জবানবন্দি মোতাবেক উদ্ধার করা হয় লাশ। পরে ঘটনার সাথে জড়িত মৃত আইয়ুব আলীর ছেলে সামছুদ্দিন (৪২)কে আটক করা হয়। ঘটনার সাথে জড়িত একমাত্র আসামী সামছুল বর্তমানে পলাতক। তার স্ত্রী গুরুতর অসুস্থ থাকায় তাকে সেদিন তাকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।

লাশ উদ্ধার ও আসামীদের গ্রেফতারের পরদিন থেকে আসামী সামছুলসহ বাড়ির সকল নারীরাও পলাতক। কিন্তু আসামী চান মিয়ার অসুস্থ ও শয্যাশায়ী মা জুবেদা খাতুন (৮০) কে ঘরে রেখে বাইরে থেকে তালা দিয়ে সবাই পালিয়ে যায় যায়। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের ধারণা, না খেয়ে অসুস্থ জুবেদা খাতুন ২১ ডিসেম্বর মারা যান। পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করতে গিয়ে বাড়িতে থাকা গৃহপালিত গরু ও হাঁসমুরগী প্রতিবেশিদের জিম্মায় দিয়ে আসে।

Manual7 Ad Code

গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাড়িতে তালা ঝুলছে। বাড়ির কোন মহিলা কিংবা কোন মানুষ নেই। আসামীদের পুরো বাড়ি যেন ভুতড়ে বাড়ি। মহিলারা কোথায় আছে কেউ জানে না।

৫ ভাইয়ের মধ্যে নিহত মনাফ ৪ নম্বর। বিয়েও করেননি। তার জীবিত ৪ ভাই জানান, মনাফ যে দোকান পরিচালনা করতেন সেখানে তার ২ ভাগনা ও ছোট ভাই সুমন কাজ করতো। হত্যার মুল নায়ক শাহিদকে চাল কিনে দিয়েছে মনাফ। এতটা উদার ছিলো। পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করে হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি চান নিহত মনাফের ভাইয়েরা।

কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভুষন রায় জানান, একমাত্র পলাতক আসামী গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত চুড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। আদালত আসামীদের বিরুদ্ধে চুড়ান্ত রায় দেবে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!