কুলাউড়ায় ফানাই নদী খননে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:০০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
রাজস্ব তহবিলের অর্থ আত্মসাত- বড়লেখা উপজেলা পরিষদের সাঁট মুদ্রাক্ষরিক বরখাস্ত, বিভাগীয় মামলা বড়লেখায় নবপল্লব প্রকল্পের ‘প্রকল্প অবহিতকরণ’ সভা একদল অপকর্ম করে পালিয়েছে, আরেকদল সেই অপকর্মের দায় কাঁধে তুলে নিয়েছে : শফিকুর রহমান আধ্যাত্মিক, মানবিক দর্শন ও লোক ক‌বি সাধক হাসন রাজার মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ বড়লেখা মুক্ত দিবস : মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের আলোচনা সভা প্রয়াত ডা. পবন চন্দ্র দেবনাথের ছোট ভাই ব্রজেন্দ্র দেবনাথ আর নেই কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথ পুনর্বাসন প্রকল্প পরিদর্শনে রেলওয়ে সচিব- সম্পন্নের ডেডলাইনেও বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয় বড়লেখায় খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় নফল রোজা শেষে ইফতার ও দোয়া মাহফিল কুলাউড়ায় আদালতের নির্দেশনা ভঙ্গ করে কৃষকদের জমিতে ফসল রোপণের অভিযোগ ছাতকের ইউএনও’কে বিদায় সংবর্ধনা প্রদান

কুলাউড়ায় ফানাই নদী খননে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

  • শনিবার, ৩০ জানুয়ারী, ২০২১

Manual5 Ad Code

ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তা ঘরবাড়ি মসজিদ মন্দির কবরস্থান-

তাজুল ইসলাম, কুলাউড়া ::

কুলাউড়া উপজেলায় ফানাই নদী খনন কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ। কাজের দায়িত্বে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের স্বেচ্ছাচারিতা অনৈতিক ফায়দা হাসিলে অপচেষ্টায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে শতাধিক ঘরবাড়ি। রক্ষা পাচ্ছে না মসজিদ মন্দির কিংবা কবরস্থান।


কুলাউড়া উপজেলার লংলা পাহাড় থেকে উৎপত্তি হয়ে হাকালুকি হাওরে গিয়ে মিলিত হয়েছে ফানাই নদী। পাহাড়ে উৎপত্তিস্থল হওয়ায় বর্ষা মৌসুমে নদীর পানির গতিপ্রবাহ বেশি। ফলে বর্ষা মৌসুমে প্রায় প্রতি বছর নদীর পানি উপচে দু’তীরের ফসল ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। ২০১৯ সালে তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড নদীর খননসহ প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ করে।

Manual8 Ad Code

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা যায়, ৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি খননকাজ ও প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প শুরু করে। এই প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৭ কোটি টাকা। হাকালুকি হাওর থেকে শুরু করে এই ৪০ কিলোমিটার নদীটি উপজেলার ভুকশিমইল, কাদিপুর, ব্রাহ্মণবাজার, রাউৎগাঁও, কুলাউড়া সদর ও কর্মধা ইউনিয়ন দিয়ে নদীটির খনন কাজ গিয়ে শেষ হবে পাহাড়ী এলাকা মহিষমারায় গিয়ে শেষ হবে।

Manual3 Ad Code

সরেজমিন পরিদর্শণে গেলে জানা যায়, ইতোমধ্যে নদীটির খননকাজ ৪ ভাগের ৩ ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। বড় বড় ইউটার্ন রেখে নদী খনন করা হচ্ছে। যা বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পানির স্রোতে ভেঙে যাবে। ফলে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন দেখা দেবে। তাছাড়া কাজ শেষ করে সামনে এগুনোর ৩-৪ দিনের মাথায় নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধ নদীগর্ভে ধ্বসে পড়ছে। রাউৎগাঁও, কুলাউড়া সদর ও কর্মধা উইনিয়নে কমপক্ষে ৮টি ব্রীজ ঝুঁকির মুখে রয়েছে।

Manual1 Ad Code

খনন কাজ রাউৎগাঁও ইউনিয়নে আসার পর খনন কাজে নিয়োজিত মাটির কাটার এসকেভেটর চালকরা জড়িয়ে পড়েন নানা অপকর্মে। নদী খনন করতে গিয়ে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের চৌধুরী বাজার মুকুন্দপুর রাস্তার মরহুম হাজী ছলিম মিয়ার বাড়ীর সম্মূখ হতে ফানাই নদীর ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তা কেটে চলাচলের পথ বন্ধ করে দেয়। ফলে চৌধুরী বাজারে সাথে এই আঞ্চলের মানুষের যোগাযোগ বিছিন্ন রয়েছে দেড় মাস থেকে। রাস্তাটি রক্ষা করে নদী খননের কাজ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোডের নির্বাহী প্রকৌশলী বরাবরে লিখিত আবেদন দেয়া হয় গত ২৪ ডিসেম্বর। কাজের ঠিকাদার, সাইট ঠিকাদারকে ও বিষয়টি বলার পর ও কোন কাজ হয়নি।

শুক্রবার কর্মধা ইউনিয়নের হাসিমপুর-রাঙিছড়া রাস্তা এবং হাসিমপুর কবিরাজি ইটসোলিং রাস্তাটিও কেটে সরানো হচ্ছে। ফলে এই দু’টি রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মানুষ চরম দুর্ভোগের শিকার হবে। তাছাড়া এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী সিএনজি অটোরিক্সা চলাচলা বন্ধ হয়ে গেছে। ইতোমধ্যে দু’টি প্রধান সড়কসহ ৫ টি সংযোগ সড়ক বন্ধ করা হয়েছে।

নদী খননের ফলে মুকুন্দপুর কোরআন শিক্ষাকেন্দ্র (স্থানীয়দের ভাষায় মক্তব) পূর্ব হাসিমপুর মসজিদ, পূর্ব হাসিমপুর কবরস্থান এবং পূর্ব কবিরাজি কালি মন্দির ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।

Manual8 Ad Code

রাউৎগাঁও ইউনিয়নের মেম্বার মো. আনু মিয়া জানান, নদী খননের ফলে রাউৎগাঁও ইউনিয়নের বাগাজুরা, মুকুন্দপুর, গুতগুতি, কবিরাজি, লক্ষীপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার জমি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া কমপক্ষে ১৫-২০টি পরিবার সম্পূর্ণরূপে বাড়িঘর হারিয়েছে। হাসিমপুর গ্রামের কনই বেগম, মুকুন্দপুর গ্রামের সুফিয়া বেগম, রাতিব মিয়া, রকিব মিয়া, ছালেক মিয়া জনান, আমরা বাপদাদার আমল থেকে বসবাস করে আসছি। আমাদের ভিটামাটি সব চলে গেছে নদীগর্ভে। এখন আমরা কোথায় যাবো। মাথাগুজার কোন ঠাঁই নেই।

কবিরাজি গ্রামে বিজয় মল্লিক, বিকাশ মল্লিক গুতগুতি গ্রামের ইদরিছ মিয়া, মঞ্চব মিয়া জানান, নদী খননের ফলে আমরা ভূমিহীন হয়ে গেলাম। আমাদের বসতঘর, জমির ফসল নষ্ঠ হয়েছে। আমরা গরীব মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডে কাছে, আমরা ক্ষতিপূরণ চাই। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে মাঠিবন্দি করে রাখা হয়েছে। খনন কাজে নিয়োজিত লোকজন আমাদের কোন কথা শুনছে না।

এলাকাবাসীর অভিযোগ অপরিকল্পিতভাবে খনন কাজের ফলে গাছ, বাঁশ, সবজী আবাদ করে দিচ্ছে। নদীর খনন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা বিত্তবানদের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তন করছেন। ইচ্ছামতো খননকৃত মাঠি ফেলা হচ্ছে, কাজে সাথে ড্রেসিং না করায় শত শত পরিবার মাঠি বন্দী। ঘর বাঁচিয়ে দিবে, জমি কম কাটবে এই সব কথা বলে অনৈতিক ফায়দা নিয়ে পকেট ভারী করছে এসকেভেটর চালকরা।

রাস্তা, মসজিদ, কবরস্থান রক্ষাসহ বিভিন্ন দাবী নিয়ে উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২৭ জানুয়ারি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনও এলাকা পরিদর্শণ করেন। কিন্তু তাতে কোন সুফল হয়নি।

এব্যাপারে মৌলভবিাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক আক্তারুজ্জামান জানান, কুলাউড়া উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত এই নদীটির খননকাজ কুলাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউএনওসহ আমি সরেজমিন পরিদর্শণ করে এসেছি। কাজে কোথায়ও কোন অনিয়ম হচ্ছে না। নদীর লোপ কাটিংয়ের কোন সুয়োগ নেই। নদীর ভেতরে যাদের বাড়ি ঘর পড়েছে, তারা স্বেচ্ছায় সরে যাচ্ছে। তাছাড়া যারা দীর্ঘদিন থেকে দখল করে থাকে তাদের ব্যাপারে আমাদের করার কিছু নেই। আমরা কাউকে উচ্ছেদ করছি না। কেউ ভেটেমাটি হারা হয়ে গেলে সরকারের গ্রহায়ণ প্রকল্পে ঘরের জন্য আবেদন করতে পারে।#

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!