এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুরের এক গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। হত্যা না হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছে তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মৃত্যুর ৪০ ঘন্টা পুর মঙ্গলবার রাত আড়াইটায় তার লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
জানা যায়, সিলেটের ভাদেশ^র এলাকার ছুরুক আলীর ও মা কাতার প্রবাসী জবা বেগমের মেয়ে সুভা বেগম (১৯) ছোটবেলা থেকে নানা বাড়ী হাজীপুর ইউনিয়নের বিলেরপার গ্রামে বড় হয়। নিহত সুভার গত ৫ মাস পূর্বে বিয়ে হয় শরীফপুর ইউনিয়নের সঞ্জবপুর গ্রামের তৈমুছ আলীর ছেলে মখলিছ মিয়ার সাথে। ৫ মাসের মাথায় শাশুর শাশুড়ী ও স্বামী, স্বামীর বড় বোন নির্যাতন করে হত্যা করছেন বলে সুভার নানার বাড়ীর লোকজন দাবি করছেন। মৃত্যুকালে সুভা ৩ মাসের গর্ভবতী ছিল।
এ ঘটনায় স্বামী মখলিছ মিয়া, শ^শুর তৈমুছ আলী, শাশুড়ী রহিবুন নেছা, ননদ আম্বিয়া পলাতক রয়েছেন বলে নিহত সুভার পরিবার জানায়। তবে নিহত সুভা স্টক করে সে মারা গেছে আর কোন পলাতক নায় বলে দাবি করেন শ্বশুড় তৈমুছ আলী।
নিহতের মামা এমরান আলী জানান, হাসপাতালে মৃত অবস্থায় নিয়ে আসছে তার শশুর বাড়ীর লোকজন। হাসপাতালে যাওয়ার পর তার শ্বশুড় জানান স্টক করে মারা গেছে। শরল মনে তাদের কথা বিশ্বাস করে ভাগনির মৃত দেহ নিয়া আসি আমাদের বাড়ীতে। বাড়ীতে আসার পর তার শ্বশুড় শাশুড়ী ও স্বামীসহ আত্বীয় স্বজন পালিয়ে যান। এর পর থেকে শশুর বাড়ীর লোকজন পলাতক রয়েছেন।
তাই ধারনা করছি আমার ভাগনীকে শশুর বাড়ীর লোকজন নির্যাতন করে হত্যা করছেন। তিনি আরও জানান, লাশ দাপনের সময় তার শশুর বাড়ীর লোকজন কেউ আসেনি। ময়না তদন্তের পতিবেদন আসার পর মামলা করা হবে এমরান জানান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, লাশ ধূয়ানোর সময় অসংখ্য নির্যাতনের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
নিহত সুভার বাবা তার মায়ের সাথে বনিবনা না থাকায় ছোট বেলা থেকে নানার বাড়ী থাকে। প্রায় ১ বছর যাবত মা জবা বেগম কাতার প্রবাসে রয়েছে। সুভার দেখা শোনার দায়িত্ব দিয়ে গেছেন নানী ও মামাকে। কাতার রোজি করে প্রায় ১ লাখ টাকা ব্যায়ে মেয়েকে বিয়ে দেয়া হয়। প্রবাস থেকে কেদে কেদে বলছিলেন মা জবা বেগম, সুখের আসায় বিয়ে দিলেন কিন্তু তার মেয়ের কপালে সুখ আর হলো না। তিনি আরো বলেন, শশুর তৈমুছ আলী, শাশুড়ী রহিবুন নেছা ও ননদ আম্বিয়া বেগম মিলে আমার মেয়েকে হত্যা করেছেন। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই। সুভার নানী সুলতানা বেগম বেগম বলেন, আমার নাতনিকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়েছে।
নিহত সুভার শশুর তৈমুছ আলী জানান, বাড়ীতে সন্ধায় চা খাওয়ার সময় স্টক করার পর হাসপাতালে নেওয়া নেওয়া হয়েছে। এ সময় সুভার নানীসহ আত্বীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। তখন স্টক করে মারা গেছে হাসপাতালের ডাক্তার জানায়। ডা: অভিজিৎ রায় বলেন, হাসপাতালে আনার পর মৃত্যু দেখা গেছে। এ সময় তার নাখ দিয়ে রক্তকরন হওয়ায় সন্ধেহ করে হাসপাতালের পক্ষ থেকে পুলিশকে আনা হয়। এরপর পুলিশকে বুঝিয়ে আত্বীয়রা মৌলভীবাজার হাসপাতালে নিয়ে যায়।
হাজীপুর ইউপি সদস্য গোলজার আহমদ বলেন, নিহতের লাশ ময়নাতদন্ত করছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রির্পোট আসার পর যদি স্টক করে মৃতে্যু হয় তা হলে কোন সমস্যা নাই। আর যদি হত্যা করে মৃত্যু হয় তাহলে হত্যাকারির বিচারের আনা হবে।
কুলাউড়া থানার ওসি বিণয় ভুষন রায় বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
Leave a Reply