কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি ::
বিলুপ্ত ছিটমহলের পাথরডুবি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার পাথরডুবি ইউপিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থী চুড়ান্ত নিয়ে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে ।
কর্মী-সমর্থকদের চাওয়া আবুল বাসারকে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থী করা হোক । অপরদিকে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির ভোটে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মহিউদ্দিন আহমেদ । দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করতে সহযোগী অঙ্গ সংগঠনগুলোর মতামত না নেওয়ায় মুলত অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে ।
দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করতে গত ২৪ নভেম্বর বুধবার পাথরডুবি ইউনিয়ন কৃষকলীগ কার্যালয়ে আওয়ামীলীগের এক বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বর্ধিত সভায় দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করতে ভোটাভুটিতে যেতে হয় উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দকে। দুপুরে ভোট গ্রহন শুরু হয়। দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটির ৬৭ জন ভোট প্রদান করেন।
এতে দেখা যায় মহিউদ্দিন আহমেদ পান ২৫ ভোট এবং আবুল বাসার পেয়েছেন ১৯ ভোট। ইউনিয়ন-ওয়ার্ড কমিটির ভোটাভুটিতে মহিউদ্দিন আহমেদ ২৫ ভোট পেলেও জনসমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন আবুল বাসার এমনটাই দাবী করেছেন ওই ইউনিয়নের কর্মী সমর্থকবৃন্দ।
পাথরডুবি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক হিরো জানান, কাউন্সিল কিভাবে হয়েছে তা সবাই জানে। আপনারা জনতার কাছে যাবেন শুনতে পারবেন। তবে আবুল বাসারের মাঠ ভালো আছে। তাকে নৌকা প্রতীক দিলে জয়লাভ করানো সম্ভব।
ওয়ার্ড ছাত্রলীগের খলিলুর রহমান বলেন, ভোটাভুটিতে মহিউদ্দিন আহমেদ এগিয়ে থাকলেও মাঠে তার জনসমর্থন নেই। জনসমর্থনে আবুল বাসার এগিয়ে রয়েছে।
পাথরডুবি ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মারফত আলী জানান, মহিউদ্দিন আহমেদ আওয়ামীলীগের সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের কাউকে তিনি চিনেন না। গ্রুপিং এর কারণে তৃতীয় পক্ষের সুবিধা পেতে তিনি ২৫ ভোট পেয়েছেন ।
আবুল বাসার ১৯ ভোট পেলেও তিনি সবাইকে ভালোবাসেন। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি আবুল বাসার কে নমিনেশন দেন তাহলে তার দ্বারা বিজয় সম্ভব।
ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারনণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, মহিউদ্দিন আহমেদ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা তাকে আমরা সম্মান করি। কিন্তু তার দলের সাথে কোন সম্পৃক্ততা নাই। পক্ষান্তরে আবুল বাসার দীর্ঘদিন থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আছে।
তাকে মনোনয়ন দিলে শতভাগ বিজয় আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
৮নং ওয়ার্ড আওয়ামলীগ সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম জানান, জনগন আবুল বাসারকে চায়। মহিউদ্দিন কমান্ডার দু‘বার ভোট করে পরাজিত হয়েছিলেন। ভোট পেয়েছিলেন খুবই নগন্য।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন আওয়ামীলীগ সমর্থক জানান, আবুল বাসারকে নৌকা প্রতীক দিলে আমরা তরুন প্রজন্ম মনে করি আগামী ইউপি নির্বাচনে নৌকার বিজয় অর্জন করা সম্ভব।
আবুল বাসার বলেন, আমি ছাত্রজীবন থেকে আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ২০০১ সালে বাঁশজানী উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের স্কুল শাখার সভাপতি ছিলাম।
২০০৪ সালে ২নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। ২০১১ সালে ইউনিয়ন যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ছিলাম ২০১৪ সাল পর্যন্ত। ওয়ার্ড কাউন্সিলে সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হই।
আমি দীর্ঘ ৯ বৎসর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি।
বর্তমানে আমি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আওয়ামলীগ ও সহযোগী অঙ্গসংগঠনের সকল কাজে অংশগ্রহন করে আসছি।
আমি আমার কাজের দক্ষতা ও আমার প্রতি ভালোবাসা থাকায় ভোটগুলো পেয়েছি। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার উপর আস্থা রেখে রাজনীতি করি।
তিনি যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষেই আমি কাজ করবো। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুরোধ করছি পাথরডুবি ইউনিয়নের জনগনের মতামতকে প্রাধান্য দিয়ে তিনি নৌকা মার্কার প্রতীক বরাদ্দ দিবেন।
আমার পাশে ইউনিয়ন বাসী রয়েছে। তারা চাইলে আমি তাদের সাথে নিয়ে আগামী ইউপি নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো ইনশাআল্লাহ, জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, দলীয় প্রার্থী চুড়ান্ত করা নিয়ে যে অসন্তোষ বিরাজ করছে তা ভিত্তিহীন । যেহেতু এখনও তফশীল ঘোষনা করা হয়নি তাই অসন্তোষ থাকলে তফশীল ঘোষনা হলেই তাদেরকে একত্রিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো।
মাঠে আপনার জনমত নেই এ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিরোধী দল তো বলবেই আমার নেই তাহলে কার আছে । জননেত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দিবেন আমি তার হয়েই কাজ করবো। সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় আগামী নির্বাচনে নৌকার বিজয় হবে ।#
Leave a Reply