মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: প্রয়াত অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক এম পি এম নাসের রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন আর হচ্ছে না। ইভিএমেও নির্বাচন করতে পারবে না। সমস্ত তাবৎ দুনিয়ায় বলে দিয়েছে সুষ্ঠু,অবাধ নিরেপক্ষ গ্রহনযাগ্য নির্বাচন দিতে। এটা হানড্রেড পারসেন্ট নিশ্চিত।
শনিবার (০৮ অক্টোবর) দুপুরে মৌলভীবাজার শহরের অভিজাত রেষ্টুরেন্টের কনফারেন্স হলে জেলা মহিলাদলের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
নাসের রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন তত্বাবধায়ক সরকারের আদলেই হবে। ওই হাসিনা যে ট্যাবলেট আমাদের ৯৬ সালে খাইয়েছিল ওই একই ট্যাবলেট আমরা খাওয়াবো ২০২৩ সালে। এখন তারই ট্যাবলেট আমরা উল্টো তাকেই খাওয়াব। এ দেশে ইভিএমে কোন জাতীয় নির্বাচন হবে না। এ ইভিএম হলো তাদের একমাত্র উপায় চুরি করে ক্ষমতায় যাওয়ার। আর এই ইভিএম ক্রয় করার জন্য চলছে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা অপচয়ের আয়োজন । আমি সেদিন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাথে দলীয় বৈঠকে বলেছি, এই ইভিএম নিয়ে যে সমস্ত ইলেকশন কমিশনের কর্মকর্তা এবং সরকারি কর্মকর্তারা এর অনুমোদন প্রসেস করবে আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র দ্রোহিতার অভিযোগে মামলা করতে হবে। রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে কোন সচিব- কমিশনার সাইন দিবে ইভিএম কেনার । এখন আওয়ামীলীগের সময় শেষ হয়ে আসছে। সামনে আমাদের সময়। বিএনপি ক্ষমতায় আসছে অবধারিত। তখন রাষ্ট্রের টাকা অপচয়ের কারণে তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র্র দ্রোহের মামলা দেয়া হবে। তিনি বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ নারী আর ৪৮ শতাংশ পুরুষ। এর মধ্যে শতকরা ৮০ থেকে নব্বই শতাংশ নারীই বিএনপি কে সাপোর্ট করে। বেগম খালেদা জিয়াকে পছন্দ করে। যেকোন মহিলাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় খালেদা জিয়া ও হাসিনার মধ্যে কাকে পছন্দ। এক সেকেন্ডেই মুখ থেকে বের হবে খালেদা জিয়ার নাম।
জেলা মহিলা দলের সম্মেলনে দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরো বলেন, শুধু গঠন করলেই হবে না এখন আন্দোলনের সময়। সকলকে আন্দোলনে সামনের সারিতে থাকতে হবে। যারা আগামী দিনের মিছিল মিটিং আন্দোলন সংগ্রামে ভুমিকা রাখবে তাদেরকে দল ক্ষমতায় আসলে যথাযথ মূল্যায়ন করা হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস বলেন, শেখ হাসিনা যদি দেশে এত উন্নয়ন করে থাকেন তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে কেন ভয় পায়। তারা উন্নয়ন করেছে একথাটি সর্বক্ষণ জপে। দেশের মানুষ জানে তারা কি উন্নয়ন করেছে। আওয়ামীলীগ ভোট ডাকাতির,ভোট চুরির, গুমের উন্নয়ন করেছে। খুনের উন্নয়ন করেছে। ধর্ষনের সেঞ্চুরি করেছে। আর চারদিকে একই আওয়াজ শোনা যায়, শুধু নাই আর নাই। পানি নাই,গ্যাস নাই,বিদ্যুত নাই। অথচ এসবের বিল দফায় দফায় বাড়াচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় সকল পণ্যের দাম দফায় দফায় বৃদ্ধি করা হয়েছে। জিনিস-পত্রের দাম মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। এখন সময় এসেছে এ সরকারকে হটিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করার। আর এর জন্য ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য মহিলাদলের সকল নেতাকর্মীদের আন্দোলনে সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পরতে হবে।
প্রায় দুই যুগ পর জেলা মহিলা দলের এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে জেলা মহিলা দলের সাবেক কমিটি বিলুপ্ত করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষনা করেন দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আফরোজা আব্বাস। এসময় তিনি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা করা হবে বলে জানান। জেলা মহিলা দলের নতুন কমিটির দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা হলেন, সভাপতি ডা: দিলশাদ পারভিন,সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসরিন পারভিন,সাধারণ সম্পাদক সাবেক পৌর কমিশনার শিল্পী বেগম,১নং যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া রহমান ইতি ও সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর সুফিয়া সুলেমান কলি।#
Leave a Reply