বিশেষ প্রতিনিধি :: সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনে মাঠের প্রচারণা শেষ হচ্ছে আজ রাত ১২টায়। প্রচারণার শেষ মুহূর্তের গত কদিন মাঠের বক্তব্যে ছিল উত্তাপ। ছিল ব্যক্তিগত, পারিবারিক বিষয়াদি তুলে ধরে প্রতিপক্ষকে আক্রমণের প্রতিযোগিতাও। ধুম বৃষ্টির মধ্যেও চলছে জমজমাট প্রচারণা।
প্রার্থীরা তাদের সাধ্যমতো প্রচারণায় আছেন। নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে পরপর তিন দফা নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির লাঙ্গলের প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল। এরপর বিগড়ে যান নৌকার প্রার্থীসহ কর্মী-সমর্থকরা। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ঘোড়া প্রতীকের আব্দুল হানিফ কুটুও আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিতে শুরু করেন নৌকার প্রার্থীকে কটাক্ষ করে। কিন্তু এসবের পালটা জবাব না দিয়ে সংযত অবস্থানে নৌকার আনোয়ারুজ্জামান। তিনি বলেন, তারা নাটক করছেন।
প্রচারণা জমে উঠলে প্রথমে বর্তমান মেয়রের উন্নয়ন আর বরাদ্দের টাকা লুটের অভিযোগ তোলে আওয়ামী লীগ। তিনি নির্বাচন বর্জন করলে প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে আসেন লাঙ্গলের বাবুল। সঙ্গে ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার প্রার্থী মাওলানা মাহমুদুল হাসানও। প্রচরণার মাঠে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলে শুরু হয় আক্রমণাত্মক বক্তব্য। এর মধ্যে চরমোনাইয়ের পির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের ওপর হামলার অভিযোগে হাতপাখার প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেন। ফলে ভোটের প্রচারণার মাঠে মুখোমুখি হতে হয় নৌকা ও লাঙ্গলের প্রার্থীর।
নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দেন তিনি। এমন সময় লাঙ্গলের প্রার্থী বাবুলের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিতর্কিত বেশকিছু অডিও-ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এসব নিয়ে শুরু হয় নানা খিস্তিখেউর। সুযোগ নেয় আওয়ামী লীগ। আ.লীগ তাদের প্রচারণার মাঠে প্রচার করতে থাকে যিনি নিজেকে ও পরিবারকে নিয়ন্ত্রণ, সামলাতে পারেন না, তিনি নগর ভবন, সিটি করপোরেশন সামলাবেন কীভাবে? তবে প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের প্রচারণা, তৎপরতা থেকে নৌকার প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান নিজেকে সংযত রাখেন। মেয়র আরিফুল হকের বিরুদ্ধে বক্তব্য দেওয়াও বন্ধ করে দেন।
এদিকে নৌকার পক্ষের লোকজনের আক্রমণাত্মক বক্তব্যে অনেকটা ধৈর্যহীন হয়ে পড়েন লাঙ্গলের প্রার্থী ও তাদের লোকজন। নৌকার প্রার্থীকে উড়ে এসে জুড়ে বসাসহ নানা আক্রমণ শুরু করেন তারাও।
লাঙ্গলের বাবুল পালটা জবাবে বক্তব্য দেন উদ্বেগের সঙ্গে বলেন, আমাকে জেলে নেওয়া হোক; খুন, গুম করা হোক; তারপরও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াব না। আমার ব্যাপারে একের পর এক অপপ্রচার রটানো হচ্ছে। মানসিকভাবে হেনস্তা করা হচ্ছে। যারা নোংরা রাজনীতি করেন, এটা তাদেরই কাজ। আমার শেষ আহ্বান-আসুন নগরবাসী সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকা ডুবাই। বাবুলের জাপা চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা আব্দুল্লাহ সিদ্দিকী, নিত্যসঙ্গী আব্দুস শহীদ লস্কর বশির ব্যক্তি আনোয়ারুজ্জামানকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দিচ্ছেন।
নৌকা ও লাঙ্গলের দুটি পক্ষ যখন মাঠের মরণকামড় প্রচারণায়, তখন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী আব্দুল হানিফ কুটু নিজ দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। আনোয়ারুজ্জামানকে লক্ষ করে তার উচ্চমাধ্যমিক পাশের কলেজ নিয়ে প্রশ্ন করে বসেন। কুটুর দাবি, আনোয়ারুজ্জামানের জন্মতারিখও ভুল। তবে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, এসব ভুয়া অভিযোগ। কয়েকদিনের এমন পালটাপালটি বক্তব্যের পর নৌকা ও লাঙ্গলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটি ও উপদেষ্টারা উভয় প্রার্থীকেই সংযত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। রোববার দুই শীর্ষ প্রতিদ্বন্দ্বীর বক্তব্যেও তার কিছুটা প্রতিফলন লক্ষ করা গেছে। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্য প্রচারণার শেষভাগে এসে অনেকটা সংযত। জাতীয় পার্টির বাবুলও রোববার বক্তব্য দিয়েছেন অনেকটা সংযত হয়েই। নগরবাসীও শান্তিপূর্ণ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের অপেক্ষায়। যার মধ্য দিয়ে একজন যোগ্য মেয়র নির্বাচিত হবেন। প্রকৃত উন্নয়নের মুখ দেখবে নগরী।#
caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121caller_get_posts is deprecated. Use ignore_sticky_posts instead. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121
Leave a Reply