ওসমানীনগর (সিলেট) প্রতিনিধি :: সিলেটের ওসমানীনগরে জনৈক এক প্রবাসীর স্ত্রীকে সাথে নিয়ে আবাসিক হোটেলে উঠে লাশ হলেন রুহেল নামের এক ব্যবসায়ী। উপজেলার গোয়ালাবাজারের সম্রাট আবাসিক হোটেলের ৩১১ নম্বর কক্ষ থেকে ব্যবসায়ী রুহেল মিয়ার (৪০) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
গত শনিবার সন্ধ্যায় মৃত ব্যবসায়ীর ভাই মাজহারুল ইসলাম লাশটি উদ্ধার করেন। তবে তিনি কিভাবে মারা গেছেন তা এখনো নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। হোটেলে একজন মহিলাকে নিয়ে উঠেছিলেন বলে জানা গেছে। তবে রুহেল মারা যাওয়ার পর তার সাথে থাকা মহিলা হোটেল থেকে গোপনে চলে গেছেন বলে জানা যায়। লাশ উদ্ধারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন
রুহেলের ভাই মাজহারুল ইসলাম। মৃত রুহেল মিয়া ওসমানীনগরের বুরুঙ্গা ইউনিয়নের পশ্চিম তিলাপাড়া গ্রামের আকল মিয়ার ছেলে এবং বুরুঙ্গা বাজারের ফ্যামেলি শপের মালিক। মৃত ব্যবসায়ী রুহেলে সাথে থাকা মহিলার ছবি হোটেল কর্তৃপক্ষ এবং সংবাদকর্মীদের নিকটও সংরক্ষিত আছে।
জানা যায়, শনিবার বিকেল পৌনে ৪টার দিকে গোয়ালাবাজারস্থ সম্রাট আবাসিক হোটেলের ৩১১ নম্বর কক্ষে উঠেন ব্যবসায়ী রুহেল মিয়া। এসময় তার সাথে একজন মহিলা ছিলেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ওই মহিলার নাম তাহেনা বেগম এবং তিনি একজন প্রবাসীর স্ত্রী বলে একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।
তবে হোটেল রেজিস্ট্রারে মহিলার কোন নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ নেই। হোটেলে উঠার আনুমানিক ৪০ মিনিট পর রুহেলের সাথে থাকা মহিলা হোটেল কর্তৃপক্ষকে জানায় রুহেল খুব অসুস্থ বোধ করছে। এসময় তিনি রুহেলের দোকানে কর্মচারীকে ফোন করার জন্য তাদের বলেন। কক্ষে গিয়ে ব্যবসায়ীর শারীরিক অবস্থা দেখে হোটেল কর্তৃপক্ষ তার মোবাইল ফোন থেকে ভাইয়ের নাম্বারে কল করে বিষয়টি জানান। খবর পেয়ে ভাই মাজহারুল ইসলাম রুহেলকে নিস্তেজ অবস্থায় হোটেল কক্ষ থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ মৃতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে।
হোটেল ম্যানেজার সুজন দাশ ও কর্মচারী রাজেন্দ্র কুমার তালুকদার বলেন, ডাক্তার দেখানোর কারণ দেখিয়ে শনিবার বিকেলে একজন মহিলাকে সাথে নিয়ে বিশ্রামের জন্য ৩১১ নম্বর কক্ষ ভাড়া নেন ব্যবসায়ী রুহেল মিয়া। আনুমানিক ৪০ মিনিট পর ওই মহিলা রুহেলের শারীরিক অবস্থা খারাপ বলে আমাদের জানায়। কক্ষে গিয়ে রুহেলের অবস্থা দেখে আমরা তার মোবাইল থেকে বাড়িতে ফোন করে জানাই। তার ভাই এসে নিস্তেজ অবস্থায় তাকে নিয়ে যায়। পরে জানতে পারি তিনি মারা গেছেন। ওই মহিলা রুহেলের দোকানের ক্রেতা ও চাচাতো বোন বলে পরিচয় দিয়েছিলেন বলে জানান তারা।
এদিকে লাশের ময়না তদন্ত শেষে গতকাল রবিবার ২টায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। এঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। রুহেলের ভাই মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমার ভাই সুস্থ অবস্থায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান। খবর পেয়ে সন্ধ্যায় হোটেল সম্রাট থেকে আমার ভাইকে নিস্তেজ অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ভাইয়ের মৃত্যু রহস্যজনক উল্লেখ করে সাথে থাকা মহিলার পরিচয় খুঁজে পাবেন বলে জানান তিনি।
ওসমানীনগর থানার ওসি রাশেদুল হক বলেন, লাশের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। মৃত্যুর কারণ জানতে লাশের ময়না তদন্ত করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃতের কারণ জানা সম্ভব হবে। এঘটনায় মৃতের পরিবারের পক্ষ থেকে অপমৃত্যু মামলা দায়েরের
প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ওসমানীনগর সার্কেলে) আশরাফুজ্জামান বলেন, মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
Leave a Reply