এইবেলা, শ্রীমঙ্গল ::
জেলখানা থেকে স্বামীকে ছাড়িয়ে আনতে উকিলের কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে গেস্ট হাউজে নিয়ে ২৫ বছরের এক গৃহবধুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
ধর্ষণের শিকার হওয়া ঐ নারী শনিবার শ্রীমঙ্গল থানায় একটি অভিযোগ করেন। পরে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের অভিযানে রোববার সকালে ধর্ষণের অভিযোগে ভুনবীর ইউনিয়নের আঐ গ্রামের মৃত ছুরুক আলীর ধর্ষক ছেলে কাজল মিয়া (৩০) ও তার অপর সহযোগী একই গ্রামের মৃত রহমান মিয়ার ছেলে মতিন মিয়া (২০) কে উপজেলার আমরাইল ছড়া চা বাগান থেকে গ্রেফতার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর তাদের মৌলভীবাজার আদালতে সোপর্দ করা হয়।
গত ১৯ সেপ্টম্বর সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল শহরের হামিদা গেস্ট হাউজে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত দুই ধর্ষক কাজল মিয়া (৩০), মতিন মিয়া (২০) ও ধর্ষণের শিকার নারী উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের আঐ গ্রামের বাসিন্দা।
ধর্ষণের শিকার হওয়া নারী (২৫) বলেন, গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৯ তারিখ জেল খানায় আমার স্বামীকে দেখাতে আমার প্রতিবেশী কাজল মিয়া ও মতিন মিয়া আমাকে নিয়ে যায়। সেখান থেকে বের হয়ে তারা আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনার জন্য একজন উকিলের সাথে দেখা করতে বলে। উকিলের সাথে দেখা করে তারা আমার স্বামীকে ছাড়িয়ে আনবে বলে আমাকে জানায়। পরে আমি তাদের সাথে যাই। তারা আমাকে শ্রীমঙ্গল শহরের হামিদা গেস্ট হাউজে নিয়ে একটি রুমে বসায়। অনেকক্ষB বসার পর তারা দুজনে আমার সাথে থাকা ৫ বছরের শিশুটিকে অন্য কক্ষে নিয়ে গিয়ে একজন একজন করে আমাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে তারা আমাকে গেস্ট হাউজে ফেলে রেখে চলে যায়। আমি সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যাই। পরে আমি মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হই সেখানে আমার ডাক্তারি পরিক্ষা হয়। আমি অসুস্থ থাকায় থানায় অভিযোগ করতে পারিনি। তবে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল থেকে তথ্য পেয়ে শ্রীমঙ্গল থানার এক এস আই আমার সাথে ফোনে কথা বলেছিলেন। আমি গতকাল তাদের নামে থানায় অভিযোগও করি।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ সোহেল রানা বলেন, ধর্ষিতা গৃহবধু অভিযোগ করেছেন গত ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে তার গ্রেফতারকৃত স্বামীকে থানায় দেখিয়ে কোর্টের মাধ্যমে ছাড়িয়ে আনার জন্য একজন উকিলের সাথে পরামর্শ করার কথা বলে তাকে বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। সকাল ১১টার দিকে শ্রীমঙ্গল শহরের একটি গেস্ট হাউজে গৃহবধুকে নিয়ে একটি রুমে বসায় কাজল ও মতিন। অনেকক্ষন বসার পর তারা দুজনে গৃহবধুর সাথে থাকা ৫ বছরের শিশুকে অন্য কক্ষে নিয়ে যায়। এরপর একজন একজন করে তাকে জোড় পূর্বক পালাক্রমে ধর্ষণ করে গেস্ট হাউজে রেখে চলে যায়। সেখান থেকে গৃহবধু বাড়ি ফিরে যায়, পরে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেয়।
শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় থানায় অভিযোগ করতে দেরি হয় বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন। তিনি জানান, আমাদের কাছে অভিযোগ করার পর আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে অভিযুক্তদের আজ উপজেলার আমরাইলছড়া থেকে গ্রেফতার করেছি। তাদের আজ রোববার মৌলভীবাজার আদালতের মাধ্যমে জেলাহাজতে পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে আরো তদন্ত করছি। তদন্ত শেষে আদালত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।#
Leave a Reply