এইবেলা, কুলাউড়া ::
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ও কুলাউড়ার কৃতি সন্তান ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের কল্যাণ নিহিত রয়েছে, যার হাতে রাষ্ট্র নিরাপদ, আল্লাহ যেন তার হাতে রাষ্ট্রের ক্ষমতা তুলে দেন। তারা যেন আল্লাহকে ভয় করে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। একটা কঙ্কাল আমরা পেয়েছি। অসুবিধা নেই মহান আল্লাহ যদি সহায় থাকেন এই কঙ্কালটাই জীবন্ত প্রাণি হয়ে দাঁড়াইয়া যাবে।
অনেক মানুষ স্বার্থপর দাবি নিয়ে আমার কাছে আসতে পারে। আমি না করি না, আমি বলতাম হ্যাঁ আমি বলে দেবো। আমিতো যার কাছে বলার তার কাছে বলি। কিছুদিন পর আবার দেখা যায় ফুল ও মিষ্টি হাতে তারা আসেন। ওই আমি যে বলেছিলাম, আমার বলায় চাকরি হয়েছে। আমি যে কার কাছে বলেছি, সেটা তারা জানেই না। ন্যায় বিচারের দাবি হলো যার পাওনা সে যেন পায়। আমি যে তদবির করবো, আমার তদবিরে যদি একজন যোগ্যতা সম্পন্ন মানুষের হক নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে কাল কিয়ামতের দিন আমি কি জবাব দেবো। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হলে সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।
একটা সময় এদেশের মানুষ মুখ খোলে কথা বলতে পারতো না। নিজের ঘরেও শান্তিতে থাকতে পারতো না। সারি সারি লাশ আর স্তুপ স্তুপ রক্ত সারা বাংলাদেশ। আয়না ঘর নামে টর্চার সেল মেসোলিনি ইতালিতে চালু করেছিলো। বাংলাদেশে এর ছায়া চালু করেছিলো বিগত সরকার। আমাকে ৩ বার জেলে নেওয়া হয়েছিলো। আমি জেলে অনেক মানুষ দেখেছি, কেউ ৩ মাস, কেউ ৭ মাস থেকে জেল হাজতে। পরিবারের সাথে কোন যোগাযোগ করতে পারেনি। পুলিশ কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলাম, বলে এরা নন এন্ট্রি। এদেরকে আমরা ধরেছি কিন্তু আমরা স্বীকার করিনা। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ও সুপ্রিম কোর্টেও বিচারককে ৮ বছর এভাবে রেখেছিলো। এভাবে মানুষকে গুম করেছে। এই তালিকায় আমাদের সিলেটের ইলিয়াস আলীর নাম রয়েছে। তার পরিবার জানে না। তিনি কোথায় আছে, জীবিত আছে নাকি মারা গেছে। ৫ তারিখের পট পরিবর্তনের পরে আয়না ঘরের দুয়ার খুলে দেওয়া হয়েছে। অনেকে সেটা পরিদর্শণে গিয়ে গুম খুনের প্রমানও পেয়েছেন।
বাাংলাদেশ কোন রাজতন্ত্রের দেশ নয়। অথচ বাংলাদেশে গত সাড়ে ১৫ বছর যা হয়েছে, রাজতন্ত্রের দেশেও তা হয়নি। এই কষ্ট মানুষ বুকে নিয়ে বেড়াচ্ছিলো। রাষ্ট্র বিজ্ঞানে একটা কথা আছে, যারা স্বেরাচারি হয়ে যায়, তারা পতনের সব রাস্তা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু একটা ছিদ্র খোলা রাখে। যেটা দিয়ে তার পতন হয়। সিভিল প্রশাসন থেকে শুরু করে সববিভাগকে ঠিক সেইভাবেই সাজিয়েছিলো। ছাত্ররা তাদের ন্যায্য দাবি নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। কিন্তু সরকার ভাবেনি এই পচা শামুকে তাদের পা কাটবে। আবু সাঈদের মৃত্যু শুধু দেশ নয়, গোটা দুনিয়া নড়ে উঠলো। আন্দোলন নতুন বেগ পেলো।
৩১ তারিখ তারা চেয়েছিলো, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করতে, কিন্তু পরের দিন ১ আগষ্ট সেটা করলো। আমরা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হলাম। আমাদের প্রতিক কেড়ে নেয়া হলো। সেই আন্দোলনে ছাত্রদের পাশে শুধু আমরা নয় জাতীয়তাবাদী শক্তি ছিলো। আরও অনেকে ছিলো। সবার যুগোপৎ আন্দোলনে সরকার দিশেহারা হয়ে পড়লো।
জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান কুলাউড়া পৌরসভা মিলনায়তনে ০৮ জুন দুপুর ১২টায় পেশাজীবি প্রতিনিধিদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
উপজেলা জামায়াতের আমির সহকারী অধ্যাপক আব্দুল মুন্তাজিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর আমির ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মো. ফখরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো. ইয়ামির আলী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জেলার সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস, জেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. নিজাম উদ্দিন, উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি আতিকুর রহমান তারেক প্রমুখ।
এর আগে ঈদের দিন শনিবার (০৭ জুন) সন্ধ্যায় মৌলভীবাজারের কুলাউড়া পৌরসভা হলরুমে উপজেলা জামায়াত আয়োজিত সর্বস্তরের জনসাধারণের সঙ্গে ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা বিনিময় ও আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।#
Leave a Reply