এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া পৌরসভার আলালপুর গ্রামে ২২ নভেম্বর রোববার সাহানার জান্নাত সুইটি (৩৫) নামক ৩ সন্তানের জননীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের দাবি আত্মহত্যার কিন্তু বাবার দাবি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। নিহত গৃহবধু আব্দুল খালিকের স্ত্রী।
পুলিশ ও নিহতের পরিবার জানায়, পৌরশহরের আলালপুর গ্রামে আব্দুল খালিকের স্ত্রী সাহানারা জান্নাত শনিবার ২১ নভেম্বর রাতে পরিবারের সবার সাথে খেয়ে স্বামীসহ নিজ গৃহে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত আনুমানিত সাড়ে ৩টা -৪টা নাগাদ স্বামী আব্দুল খালিকের ঘুম ভাঙলে ঘরে দরজা খোলা দেখতে পান। এসময় আব্দুল খালিক রুম থেকে বেরিয়ে দেখতে পান সুইটি বারান্দার আড়ার সাথে ঝুলতে দেখেন। সাথে সাথে তিনি বাড়ির লোকজনকে ডেকে সুইটির গলার ফাঁস খুলে দ্রুত কুলাউড়া হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার সুইটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
আব্দুল খালিকের পরিবারের দাবি সুইটি আত্মহত্যা করেছেন। আত্মহত্যার নেপথ্য কারণ হলো শনিবার সকালে সুইটি তার বড় ছেলে তামিম আরবার শাহানকে জলপাই তানতে বলেন। কিন্তু ছেলে মায়ের কথা না শুনায় তিনি ছেলেকে বকাঝকা করেন। বিষয়টির প্রতিবাদ করেন আব্দুল খালিক ও তার ছোট ভাই। দিন গড়িয়ে রাতে সবাই যে যার মত খেয়ে ঘুমাতে যান। কিন্তু ভোর রাতে গলায় দড়ি দিয়ে সুইটি আত্মহত্যা করেন। নিহত সুইটির ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।
এদিকে নিহত গৃহবধু সুইটির বাবা কমলগঞ্জ উপজেলার শমসেরনগর ইউনিয়নের সিংড়াউলি গ্রামের বাসিন্দা মাসুক মিয়া জানান, তার মেয়েকে নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে ঝুঁলিয়ে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন শ^শুড়বাড়ির লোকজন।
তিনি ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড উল্লেখ করে আরও জানান, নিহত সুইটির সাথে পরিবারে লোকজনের বিরোধ ছিলো আগে থেকেই। সেই বিরোধের জের ধরে একবার বাবার বাড়ি আটকাও ছিলেন বেশ কিছুদিন। পরে স্বামী আব্দুল খালিক শ^শুড় বাড়ি থেকে বিরোধ নিষ্পত্তি করে সুইটিকে নিয়ে যান। আত্মহত্যা নয় সুইটিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ব্যাপারে কুলাউড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
কুলাউড়া থানার অফিসার ইনচার্জ বিনয় ভূষণ রায় জানান, পুলিশ হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়। নিহত সুইটির স্বামী দেবরসহ পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply