অভিযুক্ত ২ জনকে সাসপেন্ড
এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার হাসপাতালে হিসাবরক্ষকের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত ৩দিন থেকে চলছে তোলপাড়। এঘটনায় হিসাবরক্ষকসহ ২ জনকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাকে গরু চুরি নিয়ে চিৎকার চেচামেচি বলে ধামাচাপা দেয়ার অপচেষ্টায় লিপ্ত।
একাধিক বিশ্বস্থ সুত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাজার খ্রিষ্টিয়ান মিশন হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ডেভিট তাপাদার গত ২৪ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৩টায় এক নার্সের কক্ষে অনৈতিকভাবে প্রবেশ করেন। বিষয়টি হাসপাতালের কর্তব্যরত নাইটগার্ড সাধন টের পান। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই কক্ষের নার্সের চিৎকারে কর্তব্যরত নাইটগার্ড সাধনসহ হাসপাতালের লোকজন ছুটে আসেন। এসময় উপস্থিত লোকজন হিসাবরক্ষক ও নার্সের কাছ থেকে লিখিত নেন।
ঘটনার পরদিন ভোরে ওই নার্সকে চাকুরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হিসাবরক্ষক ডেভিড বহাল থাকায় শুরু হয় তোলপাড়। খবর ছড়ায় হাসপাতালের হেড অফিস ঢাকায়। ২৬ নভেম্বর হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ফাল্গুনি সরকার ছুটে আসেন ব্রাহ্মণবাজার মিশন হাসপাতালে।
সুত্র জানায়, প্রকল্প পরিচালক ফাল্গুনি সরকার বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক ডেভিড তপাদারকে সাথে করে ঢাকায় নিয়ে যান। অপকর্মের জন্য ডেভিড তপাদারকে চাকুরিচ্যুৎ করা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করে।
একাধিক সূত্রে জানায়, হিসাবরক্ষক ডেভিড হেড অফিসের বিশ্বস্থ লোক বলে ব্রাহ্মণবাজার মিশন হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে নানা অপকর্মে লিপ্ত। নার্স কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রথম ফাঁস হলেও, অন্তরালে অপ্রকাশিত অনেক ঘটনা রয়েছে। তার এসব অপকর্মের সাথে একজন সিনিয়র নার্সও সম্পৃক্ত বলে সূত্রটি নিশ্চিত করে। ওই সিনিয়র নার্স পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জোর অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। এমনকি মিডিয়ায় মুখ না খোলার জন্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত নার্সকে নিষেধ করেন।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নার্স জানান, ৩ বছর থেকে তিনি মিশন হাসপাতালে চাকরি করছেন। হিসাবরক্ষক ডেভিড অসৎউদ্দেশ্যে কক্ষে আসেন। এসময় তিনি চিৎকার করলে, হাসপাতালের নাইট গার্ডসহ লোকজন ছুটে আসেন। তাদের কক্ষের দরজায় তালা দিয়ে আটকে রাখেন। ২৬ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জোর করে অব্যাহতিপত্রও নেন বলে ওইনার্স জানান।
অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক ডেভিড তপাদার জানান, এটা আমাদের ইন্টারনাল বিষয়। সেদিন রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, গরু চোর হাসপাতাল এলাকায় প্রবেশ করলে হট্রগোল সৃষ্টি হয়। ওই নার্স ছুটিতে আছেন বলে তিনি জানান। বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি বলে জানান।
হাসপাতালের ডাক্তার ডেভিড তন্ময় বিশ্বাস পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করেন। তিনি জানান, যেখানে ঘটনা ঘটেছিলো, তার পাশেই একটি গরুর খামার রয়েছে। সেই খামার এলাকা দিয়ে প্রায়ই গরু চোর হাসপাতাল এলাকায় আসে। তবে ওইনার্স ছুটিতে এবং হিসাবরক্ষক মধ্যাহ্ন ভোজে আছেন বলে তিনি জানান।
উল্লেখ, ইতিপূর্বে ২০১৯ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর ডাক্তার ডেভিড তন্ময় বিশ^াসের বিরুদ্ধেও গৃহবধুর শ্লীলতাহনির অভিযোগ ছিলো।#
Leave a Reply