এইবেলা, কুলাউড়া ::
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নে সরকারি টাকায় টিলাকেটে রাস্তা নির্মাণ করছেন স্থানীয় মেম্বার মনু মিয়া। দু’টি রাস্তা নির্মাণে টিলাকাটা এবং রাস্তার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি প্রথমে মৌখিকভাবে ও পরে লিখিত আকারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে অভিযোগ করেছেন।
ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর টনক নড়েছে পরিবেশ অধিদফতরের। ০৪ জানুয়ারি পেরিবেশ অধিদফতরের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করবে বলে জানা গেছে।
এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগ ও সরেজমিন এলাকা পরিদর্শণে গেলে দেখা যায়, ২০১৯ -২০ অর্থবছরে টি আর প্রকল্পে উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রঙ্গীরকুল- পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। একই অর্থ বছরে ইউনিয়নের কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্পের আওতায় ২ লাখ টাকা ব্যয়ে কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দু’টি কাজের দাযিত্ব পান জয়চন্ডী ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার মনু মিয়া।
কাজ বাস্তবায়নের শুরু থেকে স্থানীয় লোকজন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেন। বিষয়টি মৌখিকভাবে প্রথমে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেন। পরে লোকজন লিখিত অভিযোগ দেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, রঙ্গীরকুল- পাঁচপীর জালাই রাস্তা নির্মাণে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১৩২ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার কাজ হয়েছে। এছাড়া কালা মিয়ার বাড়ি থেকে অর্জুণকুর্মি রাস্তায় ২ লাখ টাকার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকার কাজ হয়েছে।
এদিকে দু’টি রাস্তার কাজ বাস্তবায়নে মেম্বার একাধিক টিলা কেটে রাস্তা নির্মাণ করেন। রঙ্গীরকুল- পাঁচপীর জালাই রাস্তায় মলাঙ্গি টিলায় প্রায় এক হাজার ফুট টিলা ১০ থেকে ১২ ফুট গভীর করে কাটা হয়। যেভাবে খাড়া করে টিলাকাটা হয়েছে, তাতে আগামী বর্ষা মৌসুমেই টিলা রাস্তায় ধ্বসে পড়বে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান।
টিলাকাটার মাটি রাতের আধারে বিক্রি করা হয়েছে। ইউনিয়নের দিলদারপুর গ্রামের এলাইচ মিয়ার মাটি কাটার এসকোভেটর ও ট্রাক্টর মাটি কাটা এবং বিক্রিতে পরিবহন কাজে ব্যবহৃত হয়। রাস্তা নির্মাণে যেটুকু টিলাকাটা হয়েছে সেই অংশ ছাড়া বাকি কোদাল দিয়ে পরিষ্কার করেই কাজ শেষ করা হয়েছে।
অভিযুক্ত মেম্বার মনু মিয়া জানান, টিলা না কাটলে রাস্তা হবে না। রাস্তার ক্ষেত্রে পাহাড় কাটার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। পাহাড়ে যাইতে রাস্তা লাগে। এটারে পাহাড় কাটা বলে না। কেউ অভিযোগ দিতেই পারে। তবে রঙ্গীরকুল- পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজের প্রজেক্ট চেয়ারম্যান আমি নয়, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন কমরু প্রজেক্ট চেয়ারম্যান।
কুলাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. শিমুল আলী জানান, তিনি নিজে দেখেছেন রঙ্গীরকুল- পাঁচপীর জালাই রাস্তার কাজে অনিয়মের চিত্র। কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার নির্দেশও দিয়েছেন।
এব্যাপারে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, অভিযোগ আছে। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।#
Leave a Reply