মৌলভীবাজার প্রতিনিধি :: মৌলভীবাজার কারাগারে এক নারী ও শিশু নির্যাতন মামলার হাজতীর সাথে এই মামলার ভুক্তভোগী নারীর বিয়ে সম্পন্ন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বিয়ের বর কমলগঞ্জ উপজেলার সতীঝীরগাও-এর ছমির আলীর ছেলে রায়হান হোসেন ২০২২ সালের মে মাস থেকে নারী ও শিশু নির্যাতন বিচারাধীন মামলায় কারাগারে আছেন। আর কনে একই মামলার ভুক্তভোগী কুলাউড়া উপজেলার লাবনী আক্তার।
এ সময় জেল সুপার, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিসহ উভয় পক্ষের অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে ভিকটিম ও উভয় পরিবারের সম্মতিতে ইসলামী শরীয়া মতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন তারা।
ভিকটিম জানিয়েছেন বিবাদী রায়হান তাকে অপহরণ করে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে। তার সম্মতিতে এই বিবাহ হয়েছে। তাদের নবজীবনের জন্য সকলের দোয়া চয়েছেন লাবনী।
মৌলভীবাজার জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মলি আক্তার বলেন, আমি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে এসেছি। এখানে জেল সুপারসহ অন্যান্য প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি তারা ভবিষ্যতে সুখী হবে, ভালো থাকবে। যেহেতু, মামলাটি এখনো বিচারাধীন আছে এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আদালত থেকে পাওয়া যাবে।
বিয়ের ব্যাপারে ভুক্তভোগী লাবনী আক্তার বলেন, আমাকে জোর করে কিডন্যাপ করে ধর্ষণ করে। এর বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়। মামলা দায়েরের পর দুই পরিবারের আলোচনার মাধ্যমে আমি এ বিয়েতে সম্মতি জানাই। তখন মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে আমাদের বিয়ে হয়। এখন সবার কাছ একটাই চাওয়া যেন আমাদের দাম্পত্য জীবন সুখী হয়।
জেল সুপার মো. মজিবুর রহমান মজুমদার বলেন, মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে আসামী মো. রায়হান, তার সঙ্গে ভিকটিম লাবনী আক্তারের আনুষ্ঠানিক বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে জেলা কারাগারে। এসময় হাজতীর মা ও দুই চাচা এবং ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। ইসলামি শরীয়াহ মোতাবেক তাদের বিয়ে হয়েছে। বিয়েতে ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা জানতে পেরেছি এটা নারী ও শিশু ও নির্যাতন মামলা। আসামী রায়হান ২০২২ সালের ২২ মে থেকে আমাদের কারাগারে আছেন। অবশেষে আদালত যে রায় দিয়েছেন আমরা এতে ধন্যবাদ জানাই। এতে করে দুইটি মানুষের জীবন রক্ষা হয়েছে। নয়তো আসামীর জীবন জেলেই কেটে যেতো। মেয়েটির জীবনেও নানা ধরনের সমস্যা হয়েছে। এখন মেয়েও ছেলেকে গ্রহণ করেছে, ছেলেও মেয়েকে গ্রহণ করেছে। এতে আমরা শুকরিয়া জানাই।#
Leave a Reply