ছাতক থানার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ – এইবেলা
  1. admin@eibela.net : admin :
শুক্রবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৫, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
কচাকাটায় এসএসবিসি প্রকল্পের আয়োজনে স্থানীয় অংশীদারদের সাথে সংলাপ এবং ইন্টারেক্টিভ সেশন সভা ছাতক পৌরসভার উদ্যোগে দ্বিতীয় মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত কুলাউড়ায় ধানের শীষের প্রার্থী শওকতুল ইসলামের সমর্থনে বিশাল শো ডাউন জাতীয় নির্বাচনের দিনই হবে গণভোট : প্রধান উপদেষ্টা ইউনাইটেড নেশনস-এর কনফারেন্স ও জাতিসংঘে বাংলা ‘ স্মারক গ্রন্থের প্রকাশনা উৎসব  ‘মিস ইউনিভার্স’ প্রতিযোগি মিথিলা ভোট চাইলেন দেশবাসীর কাছে আ.লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্ধ জনতার আগুন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ১৭ নভেম্বর আত্রাইয়ে ইটভাটা বন্ধের বিরুদ্ধে মানববন্ধন ছাতকে ৯ মাস ধরে নেই প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা: সেবাগ্রহীতাদের চরম ভোগান্তি

ছাতক থানার বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর দুর্নীতির অভিযোগ

  • মঙ্গলবার, ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

Manual3 Ad Code

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি ::

সুনামগঞ্জের ছাতক থানাকে ঘিরে ফের উঠেছে দুর্নীতির ভয়াবহ অভিযোগ। সম্প্রতি একটি মাদকবিরোধী অভিযানে উদ্ধার হওয়া ভারতীয় মদের হিসাব নিয়ে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগে তোলপাড় শুরু হয়েছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, অভিযানে প্রকৃতপক্ষে ১৭১ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার করা হলেও দাপ্তরিক জব্দ তালিকায় দেখানো হয়েছে মাত্র ১০৪ বোতল। নিখোঁজ ৬৭ বোতল মদের কোনো হদিস নেই। যা স্থানীয়দের মতে পুলিশের অসাধু চক্রের এক ভয়াবহ অনিয়ম এবং দীর্ঘদিনের দুর্নীতির বহিঃপ্রকাশ।

এ ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের আগুন জ্বলে উঠেছে। স্থানীয়রা বলছেন, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। বরং দীর্ঘদিন ধরে ছাতক থানায় এ ধরনের অনিয়ম চলে আসছে। প্রতিবারই দায় এড়িয়ে ঘটনাগুলো ধামাচাপা দেওয়া হলেও এবার ৬৭ বোতল মদের অদৃশ্য হয়ে যাওয়া পুরো বিষয়টিকে ঘোলাটে করে তুলেছে।

অভিযানের বিস্তারিত পুলিশ সূত্র জানায়, মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সফিকুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে একটি মাদকবিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়। ছাতক পৌরসভার সুরমা পাড়া এলাকায় এ অভিযানে মোশারফ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা (নং-৪২) দায়ের করা হয়।

তবে এখানেই তৈরি হয় প্রশ্ন। মামলার নথিতে দেখানো হয়েছে, অভিযানে ১০৪ বোতল ভারতীয় মদ উদ্ধার হয়েছে। অথচ প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্ভরযোগ্য সূত্রের দাবি, অভিযানের সময় মোট ১৭১ বোতল মদ উদ্ধার করা হয়েছিল। অর্থাৎ ৬৭ বোতল মদের কোনো হিসাব নেই। সেই মদ কোথায় গেল, তা নিয়ে কোনো তথ্য দিতে পারছে না থানা কর্তৃপক্ষ।

ওসির বক্তব্য ও বিতর্ক এ বিষয়ে ওসি মোঃ সফিকুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের জানান, অভিযানের সময় তিনি অন্য কাজে ব্যস্ত ছিলেন। দায়িত্বরত কর্মকর্তারা তাকে যে তথ্য দিয়েছেন, তিনি সেটিই জানেন। অর্থাৎ তার কাছে ১০৪ বোতল মদের তথ্যই আছে। কিন্তু দায়িত্বশীল মহল মনে করছে, ওসির এই মন্তব্য আসলে দায়িত্ব এড়ানোর কৌশল এবং ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা।

Manual3 Ad Code

একজন স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “পুলিশ জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকলেও আজ তারা নিজেরাই লুটপাটে মত্ত। উদ্ধার হওয়া মালামালের অর্ধেকই গায়েব হয়ে যায়, অথচ থানার শীর্ষ কর্মকর্তারা দায় নিতে চান না। এটি জনগণের সঙ্গে চরম প্রতারণা।”

স্থানীয় জনমতের প্রতিক্রিয়া ঘটনাটি জানাজানি হতেই ছাতক শহর ও আশপাশের এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে বলছেন, পুলিশি অভিযানের নামে দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের অনিয়ম চলছে। উদ্ধার হওয়া মালামালের প্রকৃত হিসাব কখনোই জনসম্মুখে আসে না। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, “প্রতিবারই মাদকবিরোধী অভিযানের নামে প্রচার হয়, কিন্তু এর ফল কোথায়? অভিযানের পর অনেক সময় জব্দ মালামালই অদৃশ্য হয়ে যায়। এবার ৬৭ বোতল মদের গায়েব হয়ে যাওয়া প্রমাণ করে পুলিশ নিজেই অসাধু চক্রের অংশ।”আরেকজন তরুণ সমাজকর্মীর ভাষায়, “এ ধরনের ঘটনা শুধু পুলিশের ভাবমূর্তিই নষ্ট করছে না, বরং সমাজে মাদক বিস্তারের পেছনে প্রশাসনের ছত্রছায়ার অভিযোগকেও প্রমাণ করছে। যদি পুলিশই সৎ না থাকে, তাহলে জনগণ কাকে বিশ্বাস করবে?”

Manual8 Ad Code

দুর্নীতির পুরনো অভিযোগ এটি প্রথম নয়। এর আগে বিভিন্ন সময়ে ছাতক থানার বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। মাদক মামলা, জুয়া বা অন্য কোনো অপরাধে আটক মালামালের প্রকৃত হিসাব মেলে না—এমন অভিযোগ বহু পুরোনো। তবে বেশিরভাগ সময়ই বিষয়গুলো তদন্ত ছাড়াই ধামাচাপা পড়ে যায়। এবার ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসায় নতুন করে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদি থানা পর্যায়ে এত বড় অনিয়ম হতে পারে, তবে তদারকি কোথায়? জব্দকৃত মালামালের সঠিক তালিকা রাখা পুলিশের আইনি বাধ্যবাধকতা। সেখানে ৬৭ বোতল মদ নিখোঁজ হওয়া নিছক গাফিলতি নয়, বরং এটি পরিকল্পিত দুর্নীতির অংশ বলেই মনে করা হচ্ছে।

Manual6 Ad Code

তদন্তের দাবি এ ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি তুলেছেন সাধারণ মানুষ। স্থানীয়রা মনে করছেন, শুধু থানার ভেতরে তদন্ত করলে হবে না। জেলা পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ ঘটনার স্বচ্ছ তদন্ত করতে হবে। জড়িতদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না হলে পুলিশি অনিয়মের সংস্কৃতি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠবে।

একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, “৬৭ বোতল মদ কোনো ছোট সংখ্যা নয়। এগুলো গায়েব হয়ে যাওয়া মানে জনগণের আস্থাকে হত্যা করা। সরকার যদি সত্যিই মাদক নির্মূলে আন্তরিক হয়, তবে এই ঘটনায় স্বচ্ছ তদন্ত করে দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”

Manual6 Ad Code

ছাতক থানার এ ঘটনা জনমনে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। মাদকবিরোধী অভিযানে উদ্ধার হওয়া মালামালের এমন গায়েব হওয়া পুলিশের ভাবমূর্তি ও বিশ্বাসযোগ্যতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। স্থানীয়রা বলছেন, যদি পুলিশি দুর্নীতি বন্ধ না হয়, তবে মাদক নির্মূলের স্বপ্ন অধরাই থেকে যাবে। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয় এবং সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট কাটিয়ে উঠতে পারে কিনা।##

সংবাদটি শেয়ার করুন


Deprecated: File Theme without comments.php is deprecated since version 3.0.0 with no alternative available. Please include a comments.php template in your theme. in /home/eibela12/public_html/wp-includes/functions.php on line 6121

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০২২ - ২০২৪
Theme Customized By BreakingNews

Follow for More!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code